Monday, April 30, 2018

ফরিদপুর-চার যুদ্ধ হবে আর একবার

ফরিদপুর-চার
যুদ্ধ হবে আর একবার
***********************
প্রচলিত আছে যে ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের দাতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাফর সাহেবের আসল বাড়ী কুমিল্লা। তিনি কিভাবে ফরিদপুরের নাগরিক ও ভোটার হলেন তা'ব্যাখ্যা নাই দিলাম। বলতে চাই বিগত সুদীর্ঘ একবার ৫ বছর এবং এবারে একটানা ৯ বছর ক্ষমতা থাকা সত্বেও কাজী জাফর উল্লাহ সাহেব ফরিদপুর-৪ আসনে এক ওড়া মাটিও কাটেন নি এবং এমন কোন নজির নেই যে তিনি গোটা আসনের কোথাও দুই টাকার উন্নয়ন করেছেন। এ কথা কারো মন গড়া গল্প নয়, এটা এলাকার সকল নৌকার ভোটারদের অভিযোগ। একটি বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে জাফর উল্লাহ সাহেব জনগণকে ক'দিন দিয়েছেন। হিসেব করলেই আসল পরিসংখ্যান বেড়িয়ে আসবে।
ফলে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ভক্ত অনুরাগী নৌকার ভোটার রা একজন জাফর উল্লাহ বিকল্প প্রার্থী সন্ধানে ছুটে বেড়ায় এবং প্রার্থনা করে; হঠাত কোথা থেকে উদয় হল নিক্সন চৌধূরী, গর্জে উঠলো ভাঙ্গা নগরকান্দার চির বঞ্চিত অবহেলিত মানুষগুলো। বিকল্প নেতা না পেয়ে বিকল্প মার্কাই বেছে নিতে হল সাধারণ ভোটারদের। স্বয়ং বঙ্গবন্ধু কন্যা নিজে সফর করে, মানুষকে প্রতিশ্রুতি এবং উদাত্ত আহবান জানিয়েও মানুষের মন এই খন্দকার মোস্তাক আহমেদের জেলায় জন্ম নেয়া কুমিল্লার জাফর উল্লাহর দিকে আকৃষ্ট করতে পারেন নি। যা'ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত নির্বাচনের সব চেয়ে ভরাডুবি এবং লজ্জাজনক।
মানুষের রুচিবোধ চিন্তা চেতনা ইচ্ছে আকাংখা আশা ভরসার প্রতিফলন যার মাঝে দেখতে পায়;তাকেই নির্বাচিত করে। দুরন্ত দুর্বার বঙ্গবন্ধুর নাতনি নিক্সনের মাঝে মানুষ তার কিছুটা হলেও খুজে পেয়েছে। সাথে যোগ দিয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি জামাত বি এন পি। ফলে নৌকার কিছু ভোট এবং বি এন পি জামাতের ভোট নিক্সনের বাক্সে পরার ফলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ধনকুবের কিপটে জাফর উল্লাহ'র ভরাডুবি হয়।

বিষয় সেটি নয়; বিষয় হচ্ছে সব জেলায়/উপজেলার বঙ্গবন্ধু নৌকা পাগল মানুষগুলো কিছু না পেয়েই ভোট দেয় এ কথা সঠিক নয়" বলে প্রমান করেছিল ভাঙ্গা সদরপুরের মানুষ। তারা তাদের নিজস্ব এলাকার গরীব কৃষক শ্রমিক জেলে তাতী কামার কুমার ধনিক বনিকের পাশে উক্ত এলাকায় জন্ম নেয়া কোন একজনের প্রত্যাশায় ছিল। তারা পেয়ে গিয়েছে। নিক্সন চৌধূরী পদ্মা সেতু টেন্ডারবাজীতে কত শ্ত কোটি টাকা মেরেছে এবং সে টাকায় ফরিদপুর-৪ আসনের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আমি এই "অর্থ লুন্ঠন এবং উন্নয়ন" দুটো শব্দকেই অভিনন্দন জানাই। টাকা চুরি করে যদি সে টাকা জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যয় করা হয়, তাহলে বলবো সকলেরই নিক্সন চৌধূরীর মত চোর হওয়া একান্ত অপরিহার্য ।
নিক্সনকে স্থানীয় মাস্তান দিয়ে হুমকি ধমকি দৌড়ানি পিটানি ভুয়া মামলা দিয়ে নেতা কর্মীদের হয়রানি ইত্যাদি করেও কাজী জাফর উল্লাহ সাহেব নিক্সন চৌধূরীর কিচ্ছু করত পারেন নি বরং নিক্সনের পিছনে টাকার জন্য নয়-উন্নয়ন এবং এই টগবগে যুবকের সাথে হাত মেলাতে মন প্রান খুলে নিজেদের সমস্যাদির কথা বলতে সারাক্ষন কাছে পায়; এটাই জনগণের সারা জীবনের চাহিদা ছিল-যেটা বয়োবৃদ্ধ ধনকুবের কিপটা অলস প্রেসিডিয়াম সদস্য জাফর উল্লাহ সাহেবের মধ্যে আদৌ তিল পরিমান পরিলক্ষিত হয়নি।
গত নির্বাচনে নিক্সন চৌধূরীর নিকট ভরাডুবির পর ইদানিং জাফর উল্লাহ সাহেব গ্রামে গ্রামে হাটে চেষ্টা করছেন, কিন্তু নিক্সন চৌধূরীর মত মন মানসিকতা ও দৈহিক স্ববলতার অভাবে নিক্সনের ১০ ভাগ অভিনয়েও তিনি ডাউব্বা মেরেছেন।
এখানে আওয়ামী লীগ বা নৌকার বিরোধীতার প্রশ্ন নয়; এখানে প্রশ্ন আমরা আর কত জাতিরজনকের নামে, মুক্তিযুদ্ধের নামে, স্বাধীনতার নামে নৌকা প্রতীকের নামে কাজী জাফর উল্লাহ সাহেবদের মত নবাবী মানদাতা আমলের পুরাতন কাসন্দ কাধে নিয়ে হাটবো?
শেখ হাসিনা তরুনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিশ্বাসী। আগামী প্রজন্ম মহান স্বাধীনতার ধারক ও বাহক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বিশেষ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির পারিবারিক বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করে আওয়ামী লীগের লাল সবুজের ৪ তারকা খচিত পতাকা তুলে দিচ্ছেন। তাঁর বয়স হয়েছে। একদিন তিনিও চলে যাবেন-জাফর উল্লাহ সাহেবদেরকেও যেতে হবে-সেদিন কে ধরবে হাল, কে তুলবে পাল? সূতরাং দেশরত্ন শেখ হাসিনার আদর সোহাগ ও স্নেহ ভালোবাসায় বেড়ে ওঠা নিক্সন চৌধূরীদের ক্ষমতায়নে আমার পূর্ণ সমর্থন রইলো। অচল পয়সা দিয়ে কিছু ক্রয় বিক্রয় করা যায় না, তেমনি অচল নেতা দিয়ে জনগণের উন্নয়ন ও মন জয় করা যায়না। এ লজিক যদি ভ্রান্ত না হয়ে থাকে তাহলে আগামী নির্বাচনে আমরা ফরিদপুর ৪ আসনে কুমিল্লা থেকে ভেসে আসা কাজী জাফর উল্লাহ সাহেবের পরিবর্তে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান স্বাধীনতার অন্যতম সফল সংগঠক মরহুম ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী দাদাভাইয়ের পুত্র ও হুইপ লিটন চৌধুরীর ছোট ভাই জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর নাতি মোঃ মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধূরীকে আমরা ২০১৮ এর নির্বাচনে নৌকার মাঝি হিসেবে দেখতে চাই।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
মুক্তিযোদ্ধা মোকতেল হোসেন মুক্তি

Saturday, April 14, 2018

শুভ নববর্ষ ১৪২৫

শুভ নববর্ষ ১৪২৫ গতকাল আমার ৬৫তম জন্ম দিনে অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী বন্ধু ভাই ভ্রাতা ভগ্নি ফেসবুক টুইটর ইয়াহু ওয়ার্ডপ্রেস লিংকড ইনষ্টগ্রাম গুগল ফ্লিকারে শুভেচ্ছা দিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ প্রদান করা সম্ভব ছিল না। সবাই ভালো থাকুন, সবাই সুস্থ্য থাকুন, সুন্দর থাকুন, সকলের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটুক আত্মীয় পরিজন বন্ধু বান্ধব মা বাবাকে নইয়ে নিশ্চিন্তে নিরুদ্বেগে শান্তিতে সুখে সমৃদ্ধিতে। সকলের জীবনের সকল কষ্ট বেদনা হতাশা ব্যর্থতার গ্লানি মুছে যাক বৈশাখী দক্ষিণা সমীরনের দমকা হাওয়ায়। ভরে উঠুক বাঙ্গালীর জীবনের প্রতিটি কানায় কানায় । হৃদয়ের রন্দ্রে রন্দ্রে বেজে উঠুক সাম্যের গান-আল ক্বোর'আন, গীতা , বাইবেল, ত্রিপিটক ও বিধাতার প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতার সমীহ শ্রদ্ধা ভক্তি একান্ত আত্মসমর্পণ। সুখে থাকুক গোপালগঞ্জের হতভাগা চির অভাগা চির বঞ্চিত লাঞ্ছিত শেখ লুতফর রহমানের সোনার ছেলে শেখ মুজিবের ১৬ কোটি ৩৫ লক্ষ মানুষ; যে একটি মানুষ স্ত্রীপুত্র কন্যা মা বাবা ভাই বোন থেকে বঞ্ছিত হয়ে সারাটি জীবন এই বাঙ্গালীর জন্য দেশ থেকে দেশান্তরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া কখনো পায়ে হেটে কখনো নৌকায় আবার কখনো ভাংগা গাড়িতে চড়ে হতভাগা হতদরিদ্র্য চির লাঞ্ছিত বঞ্চিত অবহেলিত শোষিত দুখি বাঙ্গালীর খোজ নিতে গিয়ে নিজের জীবনের সকল সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়েছিলেন বদ্ধ জেলখানায় বসেও যার বাঙ্গালীর চিন্তায় নিদ্রায় যেতে পারতেন না, সে সোনার দেশের সোনার ছেলে গোপালগঞ্জের শেখ মুজিবের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উদ্গত ভালোবাসায় সিক্ত বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমৃদ্ধশালী দেশ হয়ে উঠুক। বাঙ্গালী থাক মাছে ভাতে দুধে আমে মিষ্টিতে অনাদিকাল বৈশাখের ১ম দিনের প্রথম বৃষ্টির পবিত্র জল্ধারায় ধুয়ে মুছে নিষ্কলঙ্ক নিস্পাপ হয়ে যাক বাঙ্গালী জাতি।

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN

Friday, April 13, 2018

মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ


মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয় সমীপে মুক্তির খোলা চিঠিঃ

মহোদয়,
যথাযোগ্য মর্যাদা ও সন্মান পুরঃসর বিনীত নিবেদন এই যে, আমি জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি জাতীয় কন্ঠশিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নূর আলীর ব্যক্তিগত সচিব থাকাকালীণ ২০০২ সালে জামাত বি এন পি জোট সরকারের অবৈধ আস্তানা "হাওয়া ভবনের" ভূয়া মামলা ও নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হই এবং মালদ্বীপে এসে একটি স্কুলে শিক্ষকতা শূরু করি।
আমার চির স্বভাবজনিত দুর্বিনীত প্রতিবাদী মানসিকতার কথা স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান সরকারের বহু নেতা/মন্ত্রীগণ অবহিত রয়েছেন। আওয়ামী লীগ অফিসে বঙ্গবন্ধুর গানের মুক্তি নামেই সর্বজনবিদিত।
আওয়ামী রক্ত তাই প্রবাসে এসেও নীরব থাকতে পারিনি; যে দেশে প্রবাসীদের রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ সে দেশে আমি মুক্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ।
মালদ্বীপস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ( সাবেক হাই কমিশন) এর সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী হিসেবে বহু লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে।
এমন কি এতদবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জেনারেল আবেদীন, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল ফারুক, আব্দুস সোবহান গোলাপ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমান, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও ডঃ দীপুমনিও অবহিত আছেন।
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের অনেক অনুষ্ঠানেই বহু মন্ত্রী ও মান্যবর সাবেক হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল আওয়াল সাহেবও যোগদান করেছিলেন । ভিডিও ও ছবি প্রমানবহন করে (ছবি সংযুক্ত )

মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০১৪ সালে ইস্কান্দার স্কুলে জাতীয় শোক দিবস পালনের আয়োজন করেছিলাম । সে অনুষ্ঠান করতে দেয়নি হেড অফ দি চ্যাঞ্চেরী হারুন অর রশিদ।

আমি মালদ্বীপের মহামান্য প্রেসিডেন্ট ডঃ ইয়ামীন মাওমুনের একটি অনুষ্ঠানে তাঁর সামনেই ছিলাম।

হঠাত একটি ফোন এলোঃ
*******************
ঃহ্যালো আমি হেড অফ দি চ্যাঞ্ছেরী হারুন অর রশিদ বলছি;
ঃকে মুক্তি সাহেব বলছেন?
ঃজ্বি
ঃশুনেছি আপনি ১৫ই আগষ্ট পালন করছেন আপনার ইস্কান্দার স্কুলে?
ঃজ্বি আমার সব অনুষ্ঠান তো ইস্কান্দার স্কুলেই হয়ে থাকে।
ঃআপনি এ অনুষ্ঠান করতে পারবেন না; ঐ দিন হাই কমিশন থেকে অনুষ্ঠান করা হবে সূতরাং আপনার অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে;
ঃআমি এ মুহূর্তে কথা বলতে পারছি না; আমি প্রেসিডেন্টের সামনে কাজেই পড়ে কথা বলছি;
ঃআপনি বুঝতে পারছেন তো যে হাই কমিশন আপনাকে কল করেছে?
******************
মালদ্বীপের রাজধানী মালে ইস্কান্দার স্কুলে আমি মুক্তি যে হলটিতে পররাষ্ট্র প্রতি মন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রবাসী কল্যান ও জনশক্তিমন্ত্রী ইঞ্জিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন দেরকে সংবর্ধনা দিয়েছি, সে হলেই আয়োজন করেছিলাম জাতীয় শোক দিবস ২০১৪।

সে অনুষ্ঠানের অপরাধেই আমার মালদ্বীপের সোনালী দিনগুলো ১৫ই আগস্টের চেয়েও ভয়াবহ করে তুলেছিল এই হারুন অর রশিদ, হেড অফ দি চ্যাঞ্ছেরী এবং সাবেক হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল আওয়াল।
********
মালদ্বীপে আমার হাতে গড়া আওয়ামী লীগের ছেলেদের ভয় ভীতি দেখিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিয়ে আমাকে পঙ্গু করে দেয়া হল। তারপরেও হারুন অর রশিদ সাহেবের খায়েশ মিটেনি। সে মালে অবস্থানরত তার পোষা দালাল আদম ব্যবসায়ী, গাঞ্জা ব্যবসায়ী, ডলার ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ নিয়ে চলে এবং সীমাহীন দুর্নীতি লুটপাট করে বেড়ায়। এখানে অতিরঞ্জিত কিছুই লিখছি না। প্রমান সহই দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণ করেছি আমি তদন্ত চাই। অতি সম্প্রতি সে ঐ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। আমাকে টেলিফোনে মারধর করার হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি মালদ্বীপ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।

মালদ্বীপ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হয়ে গেল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে বাংলাদেশ দূতাবাস গত ২১শে ফেব্রুয়ারি এবং স্বাধীনতা দিবসে একজন ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় কন্ঠশিল্পী ও মালদ্বীপ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মালদ্বীপ সরকারের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিক্ষক (আমি নিজে ), একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মালদ্বীপে কর্মরত ৩৩ বছরের সিনিয়র ফিজিক্সের শিক্ষক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মীর সাইফুল ইসলাম এবং আর একজন ২৫ বছর যাবত মালদ্বীপে শিক্ষকতায়রত গজল সঙ্গীত শিল্পী মালদ্বীপের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সর্বজনবিদিত শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম।

এই তিন জন শিক্ষকের কাউকেই মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মালদ্বীপস্থ দূতাবাস নিমন্ত্রণ করেন নি। বিষয়টি মালদ্বীপের মন্ত্রণালয় ও প্রেসিডেন্ট হাউসের কর্মকর্তাদেরও নজরে এসেছে। এ দেশে বাংলাদেশী এই তিনজন শিক্ষকই অত্যন্ত দক্ষতার কারনে এবং বিশেষ করে শফিক ও আমি গানের কারনে প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে কোন মন্ত্রী, ধনিক ব্যবসায়ী, বর্ণাঢ্য বণিক শিল্পী ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কেউ নেই যে আমাদের এই তিনজনকে না চিনেন বা না জানেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে স্বাধীনতা দিবসে আমন্ত্রণ না করার হেতু একটাই হতে পারে যে দেশ আজো স্বাধীন হয়নি অথবা এই দূতাবাস পাকিস্তানের অথবা এই দূতাবাসে মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী নেই।
মহান স্বাধীনতা দিবসে কেন আমাদের দূতাবাস নিমন্ত্রণ করেনি? আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভাগীয় মাননীয় মন্ত্রী হিসেবে আপনাকে অবহিত করলাম।
আমরা জাতীয় সম্পদ। আমাদেরকে জাতীয়ভাবেই অপমান করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। কারন জানতে চাই।

মহানুভব, পররাষ্ট্রনীতি ও কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাত আপনার সমগ্র জীবনের লব্ধ অভিজ্ঞতা আজ পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রশাসনিক জটিলতা সমস্যাদি সমাধান ও বিদেশের সাথে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপনে আপনার সততা শ্রম ও সফলতার সূত্র ধরেই আজ সুবিচারের প্রত্যাশায় আপনাকে অবহিত করলাম। যদি বাংলাদেশ সরকার মনে করে আমি বাঙ্গালী নই, বাংলাদেশী নই-আমার পাসপোর্ট বাংলাদেশ সরকার জব্ধ করতে পারে, আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্ত এ অপমানের বোঝা নিয়ে বাঙ্গালী হিসেবে আর মালদ্বীপে পরিচয় দিতে চাইনা। প্রয়োজনে পাসপোর্ট পুড়িয়ে শরণার্থী হয়ে যাবো যেমনটি হয়েছিলাম ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রয় নিয়ে।
ভালো থাকুক দেশের মানুষ ভালো থাকুক শেখ মুজিবের নিরস্পেষিত নির্যাতিত লাঞ্ছিত বঞ্চিত অবহেলিত চির দুখি চির সংগ্রামী বাঙ্গালী জাতি।
আল্লাহ আপনার ভালো করুন;
দেশ আরো এগিয়ে যাক, আরো উন্নয়ন ঘটূক, উত্তরোত্তর বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ খ্যাত স্বীকৃতিকে ডিঙ্গিয়ে উন্নত দেশের তালিকায় লিপিবদ্ধ হোক;

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
আপনার একান্ত ভক্ত অনুরাগী
মোকতেল হোসেন মুক্তি
বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় কন্ঠশিল্পী
সিনিয়র সঙ্গীত শিক্ষক
ইস্কান্দার স্কুল মালে, মালদ্বীপ

Monday, March 26, 2018

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেমুক্তির খোলা চিঠিঃ

come to mukthi and learn the truth
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেমুক্তির খোলা চিঠিঃ 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি বিশেষ্য বিশেষন দিয়ে তোষামোদি করতে জানিনা। তাই সরাসরি আমার কিছু না বলা কথা এবং কিছু হতভাগা মুক্তিযোদ্ধাদের করুন ইতিহাস আপনার সদয় অবগতির জন্য মিডিয়ার সাহায্য নিতে বাধ্য হলাম।
আপা, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুজিবনগরে প্রশিক্ষণ নেয়া যোদ্ধা।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ২রা মার্চ জাতিরজনক বংগবন্ধু/বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজুদ্দিন আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই ১০ মিনিটের নির্দেশে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চাকুরী প্রদান করেছিলেন। ৭ দিন কি ৮ দিন পায়ে হেটে না খেয়ে মুজিবনগরে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নেশায়।
 এ নেশা সাড়ে সাত কোটি মানুষের রক্তে মাংসে অস্তিত্বে মগজে সেলের মত বিধেছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ "পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে হবে"
 জাতিরজনকের এই উদাত্ত আহবানে সারা দেয়া কী ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? তাই আমি মুক্তিযোদ্ধা। নামবিহীন অস্তিত্ববিহীন মুক্তিযোদ্ধা! নাম বদলে দিলাম। মোঃ মোকতেল হোসেন থেকে নাম বদলে হয়ে গেলাম মোকতেল হোসেন মুক্তি।
পরবর্তীতে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ১৩ই এপ্রিল ১৯৭২ সালে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হলে মাদারীপুরের কৃতি সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক খাদ্যমন্ত্রী প্রয়াত ফনি ভূষন মজুমদারের অনুস্বাক্ষরে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবীল থেকে এক হাজার টাকার অনুমোদন (মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসক অফিসে) এবং ৩ বান ঢেউ টিন প্রদান করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের রেকর্ডে একজন মুক্তিযোদ্ধার কোটায় আমার চাকুরী হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের সচিবালয়ে আমিই ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলাম। আমার ডিউটি ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার ফুফা, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি, সাবেক চীপ হুইপ আলহাজ্ব হাসনাত আব্দুল্লাহ সেরনিয়াবাত এর গর্বিত পিতা, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ভাইয়ের শ্বশুর, সাংসদ ব্যারিষ্ঠার তাপসের নানা সাবেক কৃষক লীগের সভাপতি ভুমি মন্ত্রী ও পরবর্তীতে পানি সম্পদ মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায়।
ইতিহাসের ঘৃণ্য কালো অধ্যায় ১৫ঈ আগস্টের মধ্যযূগীয় বর্বর হত্যাকান্ডের লাশ দেখে আমি পাগল হয়ে যাই। পিজি হাসপাতালে আমার ৩ মাস চিকিতসা চলে এবং সে তিন মাসের বেতন ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তন করে। এ কথা সকলেই জানেন।
আমি ভারতের প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। আমার ঘরের সব কাগজপত্র আমার ভাইদের শিক্ষার সনদ, জমির দলিল দস্তাফেজ সমূহ সব মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ছিড়ে ফেলি। আমার পরিবারের সব আমি ধংস করে ফেলেছিলাম। ভুমি মন্ত্রনালয় তার প্রমান।
আমি মন্ত্রীকে এসব কথা বলাতে আমাকে অপমান করতে পারেন না। আমি প্রবাসে থাকি। আমাকে আবেদনের সুযোগ না দিয়ে অপমান করার অধিকার মন্ত্রীর নাই। তিনি আমার দরখাস্ত গ্রহন করা ও না করার অধিকার রাখেন কিন্তু মেজর জেনারেল সুবিদ আলীর নির্দেশে  আমাকে অপমান করতে পারেন না। তিনি আমার আবেদনে লিখেছেন
“যেহেতু আবেদনকারী বহুবার দেশে এসেছিলেন এবং আবেদন করেন নি তাই তার আবেদন গ্রহন করা গেল না”
তিনি মেজর জেনারেল সুবিদ আলীর শিখানো কথা মত বললেনঃ ৪৫ বছর পরে মুক্তিযোদ্ধা হতে এসেছে। বের করে দেন”। 
আমি মুক্তিযোদ্ধাই নই, একজন সক্রিয় আওয়ামি যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আমার জীবনে অন্য কোন বিষয় কাজ করেনি এবং এ মুক্তিযুদ্ধ বংগবন্ধ ও আওয়ামী লীগই আমার ধ্যান ধারনা চিন্তা চেতনা আদর্শ এ কথা প্রমান করে আমার ৬০ হাজার প্রায় লীফলেটস, ব্যানার ও পোষ্টার এশিয়ায় ইন্টারনেট চালু হবার পর থেকেই কার বিনা প্ররোচনায় করে এসেছি। শুধু তাই নয় আমি ২০০ ওয়েব সাইট ও ব্লগ মেইনটেইন করি যা’শুধু যুদ্ধাপরাধী মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সংক্রান্ত। এ সকল ছবি ও ব্লগ/ওয়েবসাইটগুলোই প্রমান করে যে আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রীতিমত একজন বদ্ধ উন্মাদসম গবেষক।Just write my name on the google search engine where you’ll get real Identity of mine “write Moktel Hossain Mukthi or muktimusician.এ ছাড়াও আমি একজন একনিষ্ঠ অনলাইন আওয়ামী যোদ্ধা। মালদ্বীপের বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, মালদ্বীপের মাটিতে আমিই সর্ব প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু এবং পাকিস্তানের ৩০ লক্ষ বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জনসভায় বক্তৃতা প্রদান করে পাকিস্তান হাই কমিশনের মামলা খাওয়া একজন মালদ্বীপ সরকারের শিক্ষক।
 মন্ত্রী মহোদয় এ সব পরিচয় জানার পরেও বলেন নি যে আপনি বসেন বা কিছু বরং তাঁর আচার ব্যবহার এতই রুঢ় ছিল যা’ শিবির বা জামাতের কারো সাথে করছেন বলে অনুমেয়। আমার সাথে ভদ্র ভাষায় কথাও বলেন নি। এক পর্যায়ে জেনারেল সুবিদ আলীর কথায় তিনি আমাকে ঘাড় ধরে তাঁর কক্ষ থেকে বেড় করে দেয়ার কথা বলেন এবং অতঃপর.........।।
তিনি মন্ত্রী না হলে হয়তো সেখানেই কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতো। আমি আমার নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে চলে আসি।
আমার সহযোদ্ধারা এখনো অনেকেই বেচে আছেন। ড: গোলাপ আমার সাথের একই ক্যাম্পের যোদ্ধা। আওয়ামি যোদ্ধা। 
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী সব সময় প্রচন্ড মিথ্যা কথা বলেন। যা' মিডিয়া ও বক্তৃতায় বলেন, বাস্তবের সাথে তার কোন মিল নেই; তিনি যা বলেন সব মিথ্যা কথা মিথ্যা তথ্য। এখনো বহু আসল মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করতে পারেনি অথচ তিনি বক্তৃতায় ঘোষনা করলেন সকল জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কথা রেকর্ড করা হবে। আসল অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামই সংগ্রহ করতে পারেন নি-তিনি কিভাবে এ ঘোষনা প্রদান করেন?
তার দেয়া সব তথ্য জাতিকে বিভক্ত করছে; মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কলঙ্কিত হচ্ছে। নতুন তালিকা প্রণয়নের নামে এগুলো প্রতারণা। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। মিডিয়া, দেশবাসী এমন কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রতারণা করছেন । দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপজেলা ও জেলাসমূহে যে দুর্নীতি চলছে, যে সনদ ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের বিগত বছরগুলোর সকল সফলতা এমন কি মহান মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের যে অবদান সব মলিন হয়ে যাবে এই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীদের মত স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা/কমান্ডারদের কারনে।
কারন আপনি আদর্শিক কারনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষন ও মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করছেন।  সমস্ত মন্ত্রী এম পি দের তৃনমূলের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। ক্ষমতা ও অর্থ সম্পদ শালী মধ্য শ্রেণীর নেতা যার মধ্যে অর্ধেকই প্রায় জামাত শিবির ও বি এন পি, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে, হাত মিলিয়ে আমার মত পাগল ছাগল নিবেদিত ত্যাগি সৎ নিষ্ঠাবান অভিজ্ঞ উচিত কথাবলার প্রকৃত মুক্তিসেনাদের এভাবেই তারা অপমান তাচ্ছিল্য করে দূরে সরিয়ে রাখে। যে কারনে ছাত্রলীগের ছেলেদের সেনাবাহিনী নৌ বাহিনী বিমান বাহিনী পুলিশ বিজিবি ও অন্যান্য সরকারী ভালো পদে চাকুরী হয় না।
কারন ওরা ত টাকা দিতে পারবে না। দলীয় ছাত্র লীগের ছেলেদের নিকট টাকা চাইতেও পারে না; যদি আবার নেত্রীকে বলে দেয় বা জানিয়ে দেয়। তাই গোপনে আওয়ামী লীগের নেত্রীর বিশ্বাসী নেতাগন গোপনে চাকুরী প্রদান করে, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের ভর্তির সুপারিশ ও তদবীর করে জামাত বি এন পির ছেলে মেয়েদের । কারন টাকা পাওয়া যাবে।
 উত্তরা ও এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় আমার বাস। আমার জানা মতে ঠিক আমারই মত ত্যাগি জীবনবাজী রেখে নৌকার জন্য ভোট সংগ্রহ কারীর একটি মেয়েকে বঙ্গ মাতা স্কুলে ভর্তির জন্য কি না করেছে? মায়া ভাই পর্যন্ত বিষয়টি জানতেন। সে মেয়েটি সুযোগ পায়নি; দেখা গেছে-ঢাকা এয়ারপোর্ট ও বিমানে চাকুরীরত জামাত বি এন পির ছেলে মেয়েরা অজানা রহস্যের কারনে সবাই সুযোগ পেয়ে গিয়েছে।
 এর নাম স্বাধীনতা? মুক্তিযুদ্ধ? আওয়ামী লীগ?
 এত সে বঙ্গবন্ধুর নৌকা ডুবানোর দুরদন্ত শয়তানী মাঝি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চাষী মাহবুবুল আলম, নূরুল ইসলাম, কে এম ওবায়দুর রহমান তাহের উদ্দিন ঠাকুরদের চেয়ে একটূ কম নয়।
আমিই হলাম বাঙ্গালী জাতির মধ্যে সবচেয়ে কুলাঙ্গার। ধিক্রিত অবহেলিত লাঞ্ছিত মূর্খ বেয়াকুপ বেয়াক্কেল আহাম্মদ বোকা গাধা । না পারলাম প্রাণ খুলে হাসতে না পারলাম দুটি কন্যা সন্তানকে প্রাণ খুলে হাসতে। কি লাভ হল? এ স্বাধীনতায়? যে স্বাধীনতা আমার অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয় না; সে স্বাধীনতাকে আমি কেন স্বীকৃতি দেব? রাষ্ট্রই যদি আমাকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়, আমি কেন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবো? কেউ দেবে না। এটাই নিয়ম, এটাই লজিক। জানি আমি এতে হবো রাষ্ট্রদ্রোহী। তাও মন্দ কী? একটা কিছু ত হবো? আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধাকে ঘাড় ধরে বেড় করে দেয়?? এ স্বাধীনতার অর্থ কী? কেন পেলাম? কি আশায় স্বাধীন হলাম? কিসের নেশায় নৌকা নৌকা মুজিব মুজিব করে জীবনের শেষ অবস্থানটুকুকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে নির্বাসিত হলাম এই দ্বীপ রাজ্য মালদ্বীপে । ভুল কোথায়? ভুল তো আছেই হয়তো জানিনা জীবনের কোথায় কোন সিদ্ধান্তে বড় রকমের ভুল ছিল। তাই ভুলের মাশুল দিয়ে গেলাম ৬৫ বছর বয়সের মুক্তিযোদ্ধা মোকতেল হোসেন মুক্তি।
ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এর সমাধান চাই। এর একটি পরিস্কার ব্যাখ্যা চাই; সত্যের জয় হবে; তাই চাই; জাতিরজনকের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ ক্ষমতায় থেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের নিয়ে রঙ তামাশা করবে; মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণের নামে ব্যবসা করবে, এর জন্য যুদ্ধে যাইনি, এর জন্য ৩০ লক্ষ বাঙ্গালী শহীদ হয়নি; এর জন্য ২ লক্ষ ৪০ হাজার মা বোনের ইজ্জত হারায়নি। আসল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাই করতে ব্যর্থ মোজাম্মেল হক।
এই মিথ্যাচারের জন্য আল্লাহ্‌ বিচার করবেন রোজ হাসরের দিন। মহান আল্লাহর বিচারে কারো হাত নেই। আল্লাহর উপরে কোন মন্ত্রী নেই; আল্লাহর উপরে বিচারক নেই; রোজ হাসরের থেকে শক্তিশালী ক্ষমতাবান কোন আদালত নেই। বহু আসল মুক্তিযোদ্ধা এখনো তালিকার বাইরে এবং এ সমস্যা আগামী ১০০ বছরেও কোন সরকার সমাধান করতে পারবে না। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কথা রেকর্ড হবে ।
মন্ত্রী নিজেও জানে না যে উপজেলা জেলা গুলোতে এই তালিকা নিয়ে কি পরিমান টাকার ছাড়াছড়ি চলছে? কি পরিমান ব্যবসা করছে নব্য থানা কমান্ডারগণ। এমন কোন উপজেলা নেই যেখানে সত্যকারের মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়ে নাই এবং ভূয়া মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী মন্ত্রীর ক্ষমতা বলে নয়তো এম পির ক্ষমতা বলে অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতা বলে নতুন তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এমন প্রমান আমার গ্রামে আমার ইউনিয়নে রয়েছে। আমি ত অন্যের ক্কথা শূনে এ সব লিখিনি ভাই।ফুরিয়ে যাচ্ছে ৭১ এর সোনার ছেলে মেয়েরা, বেচে থাকবে শুধু ৭১ এ জন্ম নেয়া নব্য মুক্তিযোদ্ধারা, যারা লক্ষ টাকায় মুক্তিযুদ্ধের সনদ কিনে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। আমরা মুজিবনগরে (ভারতে) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এর চেয়ে বড় পরিচয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ভারতের চাদপাড়া এবং পরবর্তীতে ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং আমরাও একই সময়ে একই শিবিরে একই কমান্ডারের অধীন প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপের নাম যদি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তালিকায় থাকতে পারে, তবে আমাদের নাম থাকবে না কেন? শুধু আমরা নই, সারা বাংলাদেশে বহু অখ্যাত অপরিচিত অশিক্ষিত অজো পাড়া গায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। বহু মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যেই পরলোকগমন করেছেন, কোন স্বীকৃতি ও সুযোগ সুবিধা ভোগ না করেই তারা চলে গেছেন বাঙ্গালী জাতিকে মহান স্বাধীনতা প্রদান করে। তাদের নাম কে তালিকাভুক্ত করবে? কেন একটি সঠিক তদন্ত কমিটি কর্তৃক সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়নি? এ প্রশ্ন সরকার ও দেশবাসীর কাছে। আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেত্রিত্বদানকারী দল হিসেবে জাতিরজনক বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের এ মহান দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের জীবদ্ধশায় সম্পন্ন করা উচিত। সবাই শেয়ার করুন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সত্যিকারে শ্রদ্ধা থাকে।
 আমার সার্টিফিকেট দরকার নাই। কোন ভাতার দরকার নাই। আপনি মুসলমান দাবী করলে আমি কেন করবো না? আমিওত নামাজ পড়ি? মন্ত্রী আমাকে অপমান করতে পারে না। তার চেয়ে আওয়ামী লীগের জন্য আমার অবদান সেই ৬৯ থেকে অদ্যাবধি তিল পরিমান কম নয়; বঙ্গবন্ধু আমাকে চাকুরী দিয়েছিলেন সচিবালয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। অমুক্তিযোদ্ধা ভাতা পায় এবং তা আওয়ামী লীগের আমলে এবং আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর স্বাক্ষরে কেন? আমার কি ইচ্ছে করে না যে আমার সন্তান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোক। আমার সন্তানের কি ইচ্ছে করে না, তার বাবা মুক্কতিযোদ্ধা এ কথা অন্য দশজনের নিকট বলে গৌরব বোধ করতে? মন্ত্রীর ইচ্ছে মত চলতে পারে না; এ সব তথ্য নেত্রীর জানা দরকার। দেশ আজ কোন পথে যাচ্ছে? শেখ হাসিনা কি করতে চাচ্ছেন? আর তার সাঙ্গ পাংগ মন্ত্রী আমলারা কি করছনে? আওয়ামী লীগ কে এরাই ডুবায় আর বাংলার নিরিহ মানুষ খেসারত দেয়। আমার মাদারীপুরের আমার সহযোদ্ধা ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধারা কেন তালিকায় এলো না? মন্ত্রী শাহজাহান খান সভাপতি, সেখানেও দেখলাম সব মিথ্যাচার সব ভন্ডামী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তিনি হেসে হেসে গল্প করছেন আর কাগজ স্বাক্ষর করছেন। যারা ৭১ সালে জুন মাসে আমাদের লেফট রাইট দেখে পিটি প্যারেড দেখে টিটিকিরি দিয়েছে, তারা এসেছে মুক্তিযোদ্ধা দাবী করতে এবং মন্ত্রী স্বাক্ষর করে দিলেন? দীদার ভাই@ আল্লাহ্‌র কছম, আমার সন্তান যদি আমাকে বাবা না বলে আমি সন্তান বলবো না, আমার পিতা মাতা আমাকে সন্তান হিসেবে স্বীকার না করলে আমিও করবো না। মহান স্বাধীনতা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি প্রদান না করে আমি কেন স্বাধীনতাকে মেনে নেবো? দেশ স্বাধীন করেছি আমরা, ফসল খাবে নবাগতরা; যে সংজ্ঞা আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন, সেটা আপনার ব্যাপার। আমি মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি; আমি বিজয়কে স্বাধীনতাকে মেনে নিয়েছি স্বীকার করেছি; আপনি স্বাধীনতা; আপনাকেও মেনে নিতে হবে আমি মুক্তিযোদ্ধা। নইলে ত দেশ স্বাধীনই হয়নি। স্বাধীনতা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকার না করে, আমি কেন স্বাধীনতাকে স্বীকার করবো? আমার অনেক কষ্ট অনেক দুঃখ । সে ১৫ই আগষ্ট থেকে দাউ দাউ করে জ্বলছি। কেউ জানেন না। নেত্রী কিছুটা জানেন। আমি মন্ত্রীকে দেখাবো, তিনি কি করবেন? ক্রস ফায়ার দেবেন, তাতে আমি আরো বিখ্যাত হব; বিশ্ব জানবে শেখ হাসিনার সরকারের উগ্র মেজাজী রগচটা মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাকে ক্রস ফায়ার দিয়ে মেরেছে। আমার সন্তানেরা আমার লাশ নিয়ে মিছিল করবে; আমি হব আরো জনপ্রিয়। এর পরেও আওয়ামী লীগ করি; কারন ওটা রক্তে অস্তি মজ্বজায় মিশে গেছে।
আজ যারা কালকিনিতে কমান্ডার বলে খ্যাত, এদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা নয়; এমন কি আমার ইউনিয়ন বাশগাড়ীর সকল মুক্তিযোদ্ধাদের আমার চেয়ে ত অন্য কেউ বেশী চিনে না, জানে না; এমন কি বাছাই কমিটির সভাপতি নৌ মন্ত্রী মোঃ শাহজাহান খানও তাদের চিনেন না। বিগত ১৮ই ফেব্রুয়ারী কালিকিনিতে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই হল। আসল মুক্তিযোদ্ধারা এমন কি ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কালীন কমান্ডার হানিফ মাহমুদ ( নিউজিল্যান্ড প্রবাসী ) এর নামও তালিকায় নেই যিনি চাদপাড়া রিসিপশন ক্যাম্পের সহকারী ইনুচারজ ছিলেন। হায়দার বেপারী যিনি স্বাধিনতাত্তোর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং ৭১ সালে চাদপাড়া ক্যাম্পের ইনচারজ মাদারীপুর কালকিনি ৩ আসনের প্রথম এম পি (এম সি এ) বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডঃ মতিউর রহমান (মতিভাই) র সাথে তার বাসায় থাকতেন এবং ক্যাম্প অফিসের কাজ করতেন। তার দরখাস্তও মাননীয় মন্ত্রী গ্রহন করেন নি;
বড় কষ্ট পেয়েছি; যারা মুক্তিযোদ্ধা নয়; তাদের সাথে মন্ত্রী মহোদয় হেসে কথা বললেন-গল্প করলেন, তাদের কাগজপত্র স্বাক্ষর করলেন আর যে আসল মুক্তিযোদ্ধা তাকে ফিরিয়ে দিলেন; সে কাদতে কাদতে ফিরে গেল; এ দুঃখজনক ঘটনা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খানের দ্বারা সংঘটিত হওয়ায় অবাক বিশ্বয়ে তাকিয়ে ছিলাম এবং লাল বই তে আমার নাম না থাকা সত্বেও আমি কথা বলেছিলাম। ওদের সমর্থন করেছিলাম।
মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশেষ করে যারা বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করেছে এবং এখনো করছে, তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা পাবে, তাও আবার আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাকালীন এবং আপনার মত মাদারীপুর কাপানো আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর সামান্য ভুলের কারনে? এটা ঠিক কিনা? আপনি নিজেই অনুধাবন করুন। আমরা আপনার সুবিবেচনা সুবিচারের প্রত্যাশায় অধির আগ্রহে বসে থাকলাম।
তাছাড়া আঞ্চলিক সমস্যা গুলো আপনি সরাসরি না জেনে কিভাবে সমাধান করবেন? এ মহৎ কাজটি আপনার দ্বারাই সম্পন্ন করতে হবে। সে কারনে বর্তমান বাছাই পদ্ধতি সংস্কার করে পরিবর্তন করে সম্পন্ন করতে হবে। 
ভারতে প্রশিক্ষন নেয়া আমার সহযোদ্ধা অনেকেই আর বেচে নেই; তাদের পরিবার বঞ্চিত হল মহান স্বাধীনতার ফসল থেকে। এ কাজ যারা করেছে, তারা তাদের ইচ্ছে মত অর্থ নিয়ে ৭১ এর স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় লিখে দিয়েছে। যে সমস্যা মাদারীপুরের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের কলুষিত করছে, সে সমস্যা কেন্দ্রীয়ভাবে সমাধান হবার নয়; যার যার জেলা উপজেলায়ই সমাধানযোগ্য।
আমার মুক্তিযোদ্ধা হবার সখ নেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ঐ আসল মুক্তিযোদ্ধা হতভাগাদের কি হবে? যারা ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের নাম মূখে আনেনি, তারা ভাতা পাচ্ছে, তাদের সংসার ভালো চলছে আর যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গেল, যুদ্ধ করলো তাদের নাম নেই; এ কলঙ্ক এ ব্যর্থতা যে কোন ভাবেই হোক আওয়ামী লীগ সরকারের এবং  আপনার উপরই বর্তায় কারন আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেছিল।
আপনি আমাদের শেষ ।মহান আল্লাহ্‌ যেনো আপনার দ্বারা কোন ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহনের কলঙ্ক লেপন না করে। আল্লাহ্‌ আপনাকে সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের চিনহিতকরনে সহযোগিতা করুক।
আমরা মুজিবনগরে (ভারতে) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এর চেয়ে বড় পরিচয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার বিশেষ সহকারী ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ভারতের চাদপাড়া এবং পরবর্তীতে ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং আমরাও একই সময়ে একই শিবিরে একই কমান্ডারের অধীন প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপের নাম যদি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তালিকায় থাকতে পারে, তবে আমাদের নাম থাকবে না কেন?
শুধু আমরা নই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সারা বাংলাদেশে বহু অখ্যাত অপরিচিত অশিক্ষিত অজো পাড়া গায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। বহু মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যেই পরলোকগমন করেছেন, কোন স্বীকৃতি ও সুযোগ সুবিধা ভোগ না করেই তারা চলে গেছেন বাঙ্গালী জাতিকে মহান স্বাধীনতা প্রদান করে। তাদের নাম কে তালিকাভুক্ত করবে? কেন একটি সঠিক তদন্ত কমিটি কর্তৃক সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়নি? এ প্রশ্ন আমরা কাকে করবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?  আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেত্রিত্বদানকারী দল হিসেবে জাতিরজনক বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের এ মহান দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের জীবদ্ধশায় সম্পন্ন করা উচিত।
আমার লজ্জা করে কাউকে বলতে যে আমাকে মন্ত্রী অপমান করেছে, তোমরা বিচার কর। তাই অনলাইনেই বিচার চাই। মোজাম্মেল আমাকে গায় হাত দেয়নি; মানসিক ভাবে প্রচন্ড আঘাত করেছে, যা'কোটি টাকায় শোধ হবে না; যা' রোজ কিয়ামতের আগ পর্যন্ত আমার অন্তর থেকে মুছবে না। সমাজ সংসার বন্ধু বান্ধব আত্মীয় পরিজন সবাই নিষেধ করছে=মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু না লেখার জন্য; ৭১ সালেও ত আমার মা মুক্তিযুদ্ধের নামে কোথায় গিয়ে মারা যাবো, তাই যাবার জন্য উন্মাদ হয়ে এখানে ওখানে ছটোছুটি করা দেখেই মা'বুঝেছিল, ছেলে আমার ভারতে যাবার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে; সেই মায়ের নিষেধ অমান্য করে যখন ভারত যেতে পেরেছি; তখন মায়ের উপরে ত আর কোন আত্মীয় হয় না?
 তাই আপনার দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ অপমান করলে আপনি জাতিকে কথা দিয়েছেন; প্রতিবাদীদের সাথে আপনি আছেন। আমি আমার এ সংগ্রামে আপনার সমর্থন চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
ঘরের ইঁদুর বাধ কাটলে বাঁধ দিয়ে হয়রান হয়ে যাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী;
আ ক ম মোজাম্মেল হক কে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বরখাস্ত করে জাতিরজনক, মুক্তিযুদ্ধ ও মহান স্বাধীনতার গৌরবকে অক্ষুন্ন রাখুন; আপনার সমস্ত সফলতা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের ব্যর্থতার কালিমায় মলিন হয়ে যাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। 


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি মুক্তিযোদ্ধা হতে চাইনা কিন্তু আমার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবী জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; ওরা গরীব-আমি ইনশাহ আল্লাহ্‌ গরীব নই; অনেক ধন সম্পদ নাম যশ যত সামান্য হলেও আমার দুইবেলা দুই মুঠো ভাত জোটে। কিন্তু নিভৃত পল্লীর অশিক্ষিত হত দরিদ্র্য মুজিব নগরের মুক্তিযোদ্ধা-ওরা মাসের ১০ হাজার টাকা ভাতা পেলে ওদের জীবন কত সুখের হতে পারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
যাদের অর্থ আছে, তারাই কমান্ডারদে কিনে নেয়; নেতা নেত্রীদের বাসায় বড় ধরনের উপঢৌকন পাঠায়, তাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়ে যায়;
এ দুর্নীতি এ স্বজনপ্রীতি মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য, জাতিরজনকের জন্য আপনার জন্য সর্বোপরি সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের জন্য কলঙ্কিত অধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। 
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি ভাবিনা এত কিছু একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখবার পরে আমার কি হবে? ১৫ই আগষ্টের চেয়ে ভয়াবহ আর কিছুই হতে পারে না; যে আগষ্ট আমার চোখে দেখা। এতিম কচি খোকার মত ১৫ই আগষ্ট ঢাকার রাজপথে ঘুরে ঘুরে দেখেছি লাশের সমাহার; বদ্ধ পাগল হয়ে তিন মাস জেল খেটেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী;
তেজগাও থানার এস আই জাতিরজনক কে গালি দেয়ায় গভীর রাতে এফ ডি সি'র সমূখের রেললাইনে পিটিয়ে ১৪ দিন জেল খেটেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আমার হারাবার কিছু নেই; যেমন নেই আপনার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মোহিত আমার একান্ত ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও বন্ধু ছিল। ১৫ই আগষ্ট রাতে ৩২ নং বাড়ীতে কর্মরত শহীদ এস আই সিদ্দিকুর রহমান আমাদের কোলকাতায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষন দিয়েছিলেন। শুনেছি, তাঁর নামও নাকি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নেই।
সত্য কথা অনেক সময় মহা সংকট ও বিপদ ডেকে আনে, এ লজিক আমিও জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আমি আ ক ম মোজাম্মেল হক এর পদত্যাগ চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী;
এর জন্য ইন্টারনেটের কোন বিভাগ আমি বাকী রাখবো না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আপনার দৃষ্টিতে আমার এ আবেদন কোন না কোন ভাবে পৌছাবেই।

http://narrowpolitics.blogspot.com/
 http://mukthizcreation.wordpress.com/
http://bdawamileague.wordpress.com/
 http://creationofmukthi.blogspot.com
 http://misrulesofbnpjamat.wordpress.com/
 http://sheikhhasina.blog.com/
 http://skhasinawajed.blogspot.com
 http://deshratna.weebly.com
 http://bangladeshstudentleague.blog.com/
 http://daughterofthedemocracy.blogspot.com
 http://bangabandhuporisadmv.blogspot.com
 http://thegreatestbangalee.blogspot.com
 http://theburningnation.weebly.com/
 http://jathirpitha.wordpress.com
 http://skmujiburrahman.blogspot.com
 http://bangabandhu.weebly.com
 http://bangabandhuporisad.webs.com/
 http://bangabandhu.webs.com
 http://august75tragedy.blogspot.com
 http://thefatherofnation.blogspot.com
 http://mujibshena.blogspot.com
 http://bangladeshawamileague.webs.com
 http://worldawamileague.blogspot.com
 http://charterofchange.blogspot.com/
 http://charterofchange2021.blogspot.com/
 http://digitalbangladesh.blog.com
 http://mukthi.tumblr.com/archive
 http://mukthi.tumblr.com/muktimusician
 http://thefutureleaderjoy.wordpress.com/
 http://thefutureleader.webnode.com
 http://jajaborpakhi.blog.com/
 http://moktelhossainmukthi.blog.com
 http://muktimusician.blog.co.in
 http://muktirpata.blogspot.com
 http://muthirpachali.blogspot.com
 http://mukthimadaripuri.blog.co.in
 http://amarmonmanena.webs.com/
 http://mukthi.webnode.com/
 http://muktirpata.weebly.com/
 http://khasherhat.blogspot.com
 http://amramujibshena.blog.com/
 http://muktimusician.blog.com
 http://muktimusician.stumbleupon.com/
 http://muktimadaripuri.blogspot.com
 http://muktimusician.blogspot.com
 http://mukthircollection.blogspot.com
 http://muktimusician.photobucket.com/
 http://muktimusician.wordpress.com
 http://mukthircollection.blogspot.com
 http://moktelhossainmukthi.blogspot.com
 http://freedomfighters71.blogspot.com
 http://misrulesofbnpjamat.blogspot.com
 http://warcrime1971.blogspot.com
 http://khaledaziaandrazakars.wordpress.com
মোকতেল হোসেন মুক্তি
কন্ঠশিল্পী মুক্তিযোদ্ধা
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
সময়৭১
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মালদ্বীপ শাখা
সাধারণ সম্পাদক
মালদ্বীপস্থ প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি এসোসিয়েশন
সুরকার গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক
সঙ্গীত শিক্ষক
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ।  


Monday, March 5, 2018

অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ও ভাতা প্রসঙ্গে এত জ্বলন কেন? মোকতেল হোসেন মুক্তি

অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ও ভাতা প্রসঙ্গে এত জ্বলন কেন? মোকতেল হোসেন মুক্তি
“সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি”-

former secretary Nazrul Islam khan N I Khan নামেই বেশী পরিচিত। সাবেক এই সচিব মহান মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় ৪ নেতাদের নিয়ে অনেক গবেষণামূলক প্রবন্ধ লেখা লিখেছেন। মনে প্রাণেই মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির একজন তুখোড় লেখক সমালোচক এবং গবেষক । তিনি উচ্চ শিক্ষিত বিধায় তাঁকে নিয়ে কোন খারাপ মন্তব্য করা সমীচীন নয়। কিন্তু একটি বিষয় আমার বোধগম্য হচ্ছে না যে তিনি কেন হঠাত করে মূর্খ গরীব অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের একান্ত প্রাপ্য জাতীয় মর্যাদা ও সন্মানাদি প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান এবং বিরুপ কঠোর সমালোচনামূলক বিতর্কের সৃষ্টি করলেন? একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পেলেও আমার সন্তান আমি বিদেশে নিজের কষ্টার্জিত অর্থেই লেখা পড়া করিয়েছি। নিজে যা'পারিনি তা' সন্তানদের পুরন করার এই যে মহান প্রত্যয় ও প্রত্যাশা তা' বাস্তবায়ন করা অতি হত দরিদ্র্য নিভৃত পল্লীর অখ্যাত অজ্ঞাত অশিক্ষিত একজন বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা আদৌ সম্ভব নয়। ১। মাদারীপুর কালকিনি উপজেলার কমান্ডার মুক্তিযুদ্ধকালীন আমার কমান্ডার New Zealand প্রবাসী Hanif Mahmud নিজেও উচ্চ শিক্ষিত এবং তাঁর সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। ২। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী সেক্টর কমান্ডারগণ/ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক/ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূর আলী/নৌ পরিবহন মন্ত্রী মোঃ শাহজাহান খানসহ আরো অগনিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা অথবা তাদের সন্তানেরা কি অশিক্ষিত? অন্যান্য বিত্তশালী উচ্চ শিক্ষিত বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী/শিল্পী/সাহিত্যিকগীতিকার/সুরকার/সচিব/কবি/লেখক/ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ারদের কথা না হয় উল্লেখ নাই করলাম। যাদের আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে এই বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধার কোটা প্রয়োজন নেই। তাই তাঁরা এ সব নিয়ে কখনো মাথায় ঘামাননি বা বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে কোন মিডিয়া বা পত্র/পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়নি। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা এই হত দরিদ্র্য অজো পাড়া গায়ে অবহেলা অবজ্ঞা দীনহীন মানবেতর জীবন যাপন করা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়নের লক্ষ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা/কোটা ইত্যাদিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা যথা গ্যাস বিল পানি বিল বিদ্যুৎ বিল সিটি কর্পোরেশনের ট্যাক্স-আয়কর কিছুটা কমিয়ে সহজতর করার চেষ্টা করেছেন। যদিও এরই মধ্যে বিগত জামাত বি এন পি সরকারের অশুভ কর্ম পরিধি মুক্তিযোদ্ধার তালিকাকে কলুষিত ও কলঙ্কিত করেছে। তালিকায় নাম এসেছে ৪ বছরের দুধের শিশুর। বিধায় আসল মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেরই নাম আজো তালিকাভুক্ত হয়নি। যে সমস্যা নিয়ে আমরা অনেকেই হা হুতাশ এবং বর্তমান সরকারের মন্ত্রী নেতা ও কমান্ডারদের কঠোর সমালোচনা করে যাচ্ছি। অন্যদিকে অমুক্তিযোদ্ধা হাতিয়ে নিচ্ছে শেখ হাসিনার দেয়া সকল সুযোগ সুবিধাদি। "সকলের জন্য ধান, সকলের জন্য চাল, সকলের জন্য পানি, সকলের জন্য ভূমি, শিক্ষা, সকলের জন্য অন্ন বস্ত্র বাসস্থান, সকলের জন্য আর্থ সামাজিক উন্নয়নের সুসমবন্টন, সকলের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের ফসল, সকলের জন্য একটি সুখি সাচ্ছন্দ জীবন ব্যবস্থার জন্যই জাতিরজনকের আজীবন সংগ্রাম এই মহান "স্বাধীনতা"। সাড়ে সাত কোটি থেকে আজ আমরা ১৬ কোটি ৩৫ লক্ষে পৌছে গিয়েও সমাধান করা সম্ভব হয়নি হতভাগা মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যা। এর মূল কারন ১৯৭৫ সালে জাতিরজনক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা এবং পাকিস্তান আই এস আই'র পা'চাটা কুকুর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠার ফলে হারিয়ে গিয়েছে আসল মুক্তিযোদ্ধারা এবং দেশপ্রেমিক সোনার মানুষগুলো। "৭৫ পরবর্তী এমনও পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়েছে যে ভয়ে অনেকেই স্বীকার করেনি যে আমি মুক্তিযোদ্ধা" বা আওয়ামী লীগ সমর্থনকারী । কি ভয়াবহ ছিল বাঙ্গালী জাতির ২১টি বছর! ভাবতে গেলে গা'শিউরে ওঠে! লক্ষ করলেই দেখা যাবে যে স্বাধীনতা বিরোধী আল বদর আল শামস আল-রাজাকারের কোন সন্তান অশিক্ষিত নয় এবং দারিদ্র্যসীমার নীচে জীবন প্রবাহ অতিবাহিত করে না। ভাগ্নে সজীব ওয়াজেদ জয় " একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ' এর একটি সেমিনারে উল্লেখ করেছিলেন " মহান স্বাধীনতায় বাঙ্গালী জাতি বিজয় অর্জন করলেও স্বাধীনতার সুফল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির ঘরে পৌছায় নি" কথাগুলো একটি ছোট মানুষের হলেও বিশাল এবং ব্যাপক অর্থে মহা দর্শনের চেয়েও অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ ছিল সজীব ওয়াজেদ জয়ের সে বক্তব্য। অতি সম্প্রতি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জনৈক মুনতাসীর মামুন স্যার এবং শাহরিয়ার কবীর (যিনি জীবনে তাঁর কোন লেখায় বঙ্গবন্ধুকে জাতিরজনক বলে স্বীকার করেন নি বা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোন লেখা প্রবন্ধ গল্প কাহিনী কখনো লিখেন নি কিন্তু তিনি রাজাকারের ফাসি চেয়েছেন) এই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন এবং পরবর্তীতে নেত্রীর পরোক্ষ ধমক অর্থাৎ সান্টিং খেয়েই দালাল নির্মূল কমিটির দালালগণ থেমে গিয়েছিলেন। মুনতাসীর মামুন সাহেব আবার আওয়ামী লীগ সরকারের পয়সায় ইতোমধ্যে পবিত্র হজ্বব্রতটিও বীনা পয়সায় সেরে নিয়েছেন। যাক সে কথা লিখছিলাম। একটি বিষয় আমি ৭১ থেকে এ পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে লক্ষ করে এসেছি এবং হিসাব মিলিয়েও দেখেছি যে সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান স্যারের কথার মধ্যে কিছুটা সত্যতা খুজে পেলেও এই ভাতা ও কোটার বিরুদ্ধে তাঁর মত বিচক্ষন ব্যক্তি জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্ব উচ্চ ডিগ্রিধারী একজন পণ্ডিত ব্যক্তির বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি সমর্থকের কলামে/ভাষায়/লেখায়/বলায়/ তর্কে /বিতর্কে বিরোধীতা কেমন যেনো বেমানান এবং অশালীনতার মতই গা'জ্বালাময় বক্তব্য। আমি তাঁকে চিনি এবং জানি। তিনি মনে প্রাণেই জাতিরজনকের একান্ত ভক্ত অনুসারী । কিন্তু এই হতভাগা দীনহীন অশিক্ষিত হত দরিদ্র্য অজো পাড়া গায়ের সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের "অশিক্ষিত বা মূর্খ" শব্দটি ব্যবহার করে সর্বনাশ করে দিলেন! আমি হতবাক নজরুল স্যার! আপনার মত ব্যক্তির মূখে মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবীরের মত বস্তাপচা সস্তা হাত তালির প্রত্যাশায় এহেন বক্তব্য নিদারুণ বেদনাদায়ক এবং অসহনীয়। আমার গ্রামে আব্দুর রহিম সরদার নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা। যার সন্তান এস এস সি পরীক্ষা দেবার ফি না দিতে পারার কারনে ঘরে বসে কাদতে ছিলেন। তারপরে যেভাবেই হোক অন্য কেউ ব্যবস্থা করেছিল। আজ যদি এই হত দরিদ্র্য আব্দুর রহিম সরদারের অর্থ থাকত তাহলে ইউনুক গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূর আলি স্যারের মতই এই রহিমের ছেলেও আমেরিকান ইন্টারন্যাসনাল স্কুলে ইংলিশ মিডিয়ামে নিউ ইয়র্কে লেখা পড়া করত এবং মাসের ঐ ১০ হাজার টাকা ভিক্ষা এবং ছেলেকে ভর্তি ফি না দিতে পারার যন্ত্রণায় কাতরাতে হতনা। কাজেই এই হত দরিদ্র্য রহিমের ছেলে যেভাবেই হোক পাস করে একটি চাকুরী নিতে যাবে। ১০০ মার্কের মধ্যে যদি সে ৮০ থেকে ৯০ ও প্রাপ্ত হয় তার চাকুরী হবে না। কেন জানেন? কারন একটি সরকারী চাকুরী নিতে গোটা দেশে এখন হাইব্রীড কাউয়া ফার্মের মূরগীর দালালদের নিকট প্রথমে দৌড়াতে হবে। তারপরে চুক্তি হবে দালালের সাথে। কত লাখ দিতে পারবেন? না না তা' হবে না, কারন মন্ত্রী সাহেবকেই দিতে হবে ৫ লাখ। তারপরে ওমক নেতাকে দিতে হবে এবং এর মধ্য থেকেই আমার % রাখতে হবে। এখন আসুন আসল কথায় আমার গ্রাম দক্ষিন আকাল বরিশ ঐ যে হতভাগা বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম সরদারের ছেলে গল্প বলছিলাম-সে আব্দুর রহিম সরদার ওর বাপ দাদা ১৪ গুষ্ঠির সকল ঘর বাড়ী সহায় সম্বল কম্বল বিক্রয় করলেও ২ লাখ টাকার বেশী যোগার করতে পারবে না। আমার আত্মীয় আমার সহপাঠী, সহযোদ্ধা বন্ধু, আমি তার একান্তজন হিসেবে সবই জানি। সে আমারই এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছিল। তাহলে নজরুল স্যার আপনি যে বললেন সকল % কেটে মাত্র ৫% কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সীমিত রাখতে, বাকীটা কি ঐ সকল আল বদর আল শামস আল রাজাকারের সন্তানের জন্য রাখতে বলছেন? নাকি আপনার ছেলে মেয়ে অথবা মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবীরের ছেলে মেয়েদের জন্য রাখতে বলছেন? তবে স্যার একটা কথা জেনে রাখবেন-মনে রাখবেন " জাতিরজনকের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ও ২৬শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণায় উল্লেখ করা উচিত ছিল যে অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করতে পারবে না - শুধু আপনাদের মত মহা জ্ঞানপাপী পন্ডিত বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী সুদখোড় ইউনুসের মত ধনকুবের লুটেরা, রাজাকার মুসা বীন শমসেরের (লুনা মুসার) মত গোটা বাংলাদেশের খেতে খামারে ব্রিটিশ সরকারের গাঁরা ম্যাকনেট চুরি করে বিক্রয়কারী) মুনতাসীর মামুনের মত দালাল এবং শাহরিয়ার কবীরের মত সুবিধাভোগি চাটুকর তোষামোদকারীরাই মুক্তিযুদ্ধ করতে পারবে। যেহেতু বঙ্গবন্ধু কৃষক শ্রমিক জেলে তাতী কামার কুমার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কবি শিল্পী সাহিত্যিক লেখক নৌকার মাঝি ইঞ্জিনের ড্রাইভার অথবা রিকশা/ভ্যানগাড়ী চালক/বাসের ড্রাইভার/হেল্পার/ঠিকাদার কারো কথাই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে স্পষ্ট উল্লেখ করেননি। সেহেতু আপনাদের এহেন অবান্তর অহেতুক কোটার বিরোধী তথা হত দরিদ্র্য দীনহীন মজদুর অজো পাড়া গায়ের নিভৃত পলীতে রাত দিন আপনাদের মূখের অন্ন ফলানোর কাজে ব্যস্ত বয়োবৃদ্ধ অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধের "অশিক্ষিত" বলে সম্বোধন করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতিরজনকের বিদেহী আত্মাকে কষ্ট দেবার চেষ্টা থেকে বিরত হোন। আপনি ভালো থাকুন। সুন্দর থাকুন। আমরাত অশিক্ষিতই; সে দোষ ত আমাদের না স্যার? সে দোষ পশ্চিমা শোষক হায়েনা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ লিয়াকত আলী খান আইউব খান টিক্কা খান, মোনায়েম খানদের। “সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি।”- কবির এ মর্মবেদনা অনেক পুরোনো।সেদিনের কবির চেতনায় আগুন ধরেছিল বঙ্গ সন্তানদের চেহারা দেখে। তাই বড় আফসোস করে কবি তার বেদনা দগ্ধ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন কাব্যিক ছন্দে।কিন্তু আজ অনেক চড়াই উৎরাই ঘাত প্রতিঘাত আর উস্থান-পতনের মাধ্যমে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও বাঙ্গালীর জাতির পিতা নিয়ে আমরা নষ্ট খেলা,ইতিহাস নিয়ে টানাটানি এবং অপবাদ নিয়ে মেতে আছি। আমরা আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে, সংশয় এবং মানা না মানার মধ্যে দিয়ে যে নষ্ট খেলায় মেতে আছি তা শুধু আমাদের জন্য অপমান জনক না বরং তা আমাদের বিশ্বের মানচিত্রে অতি নগ্ন হিসাবেই পরিচিত লাভ করাতে দ্বিগুন সাহায্য করে। ঠিক তেমনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়নে এবং ভাতা ও কোটা নিয়েও আপনারা আজ জাতিরজনক নেই বলেই টানা হেচড়া করে সন্মানের বদলে অসন্মান করছেন। তাহলে আমাদের ঢাকা ষ্টেডিয়ামে ডেকে কেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে অস্ত্র জমাদানের প্রাক্কালে জীবন প্রদ্বীপ নিভিয়ে দিলেন না?

Monday, February 26, 2018

বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে জন্ম নেয়া প্রথম বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধা মহিয়সী নারী


লীলা রায় ও দীপালী সঙ্ঘ
চট্টগ্রামের, পটিয়ার ধলঘাটে বীরকণ্যা প্রীতিলতা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ২০০৫ সনের ২২ শে ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠিত প্রীতিলতার আবক্ষ মূর্তির স্থিরচিত্র।
প্রীতিলতা তখন সবে শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা রেখেছেন। চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা তখন মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন শেষে সক্রিয় হচ্ছিলেন। এর মধ্যে ১৯২৩-এর ১৩ ডিসেম্বর টাইগার পাস এর মোড়ে সূর্য সেনের বিপ্লবী সংগঠনের সদস্যরা প্রকাশ্য দিবালোকে সরকারী কর্মচারীদের বেতন বাবদ নিয়ে যাওয়া ১৭,০০০ টাকা ছিনতাই করে। এ ছিনতাইয়ের প্রায় দুই সপ্তাহ পর গোপন বৈঠক চলাকালীন অবস্থায় বিপ্লবীদের আস্তানায় হানা দিলে পুলিশের সাথে যুদ্ধের পর গ্রেফতার হন সূর্য সেন এবং অম্বিকা চক্রবর্তী। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় রেলওয়ে ডাকাতি মামলা। এই ঘটনা কিশোরী প্রীতিলতার মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। স্কুলের প্রিয় শিক্ষক ঊষাদির সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই মামলার ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে অনেক কিছুই জানতে পারেন তিনি। ঊষাদির দেয়া “ঝাঁসীর রাণী” বইটি পড়ার সময় ঝাঁসীর রাণী লক্ষীবাইয়ের জীবনী তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করে। ১৯২৪ সালে বেঙ্গল অর্ডিনান্স নামে এক জরুরি আইনে বিপ্লবীদের বিনাবিচারে আটক করা শুরু হয়। চট্টগ্রামের বিপ্লবীদলের অনেক নেতা ও সদস্য এই আইনে আটক হয়েছিল। তখন বিপ্লবী সংগঠনের ছাত্র আর যুবকদেরকে অস্ত্রশস্ত্র, সাইকেল ও বইপত্র গোপনে রাখার ব্যবস্থা করতে হত। সরকার বিপ্লবীদের প্রকাশনা সমুহ বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে। প্রীতিলতার নিকট-আত্মীয় পূর্ণেন্দু দস্তিদার তখন বিপ্লবী দলের কর্মী। তিনি সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত কিছু গোপন বই প্রীতিলতার কাছে রাখেন। তখন তিনি দশম শ্রেনীর ছাত্রী। লুকিয়ে লুকিয়ে তিনি পড়েন “দেশের কথা”, “বাঘা যতীন”, “ক্ষুদিরাম” আর “কানাইলাল”।এই সমস্ত গ্রন্থ প্রীতিলতাকে বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে। প্রীতিলতা দাদা পূর্ণেন্দু দস্তিদারের কাছে বিপ্লবী সংগঠনে যোগদান করার গভীর ইচ্ছার কথা বলেন। কিন্তু তখনো পর্যন্ত বিপ্লবীদলে মহিলা সদস্য গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি নিকট আত্মীয় ছাড়া অন্য কোন মেয়েদের সাথে মেলামেশা করাও বিপ্লবীদের জন্য নিষেধ ছিলো।
আত্মাহুতির স্থানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ২০১২ সালের ২ অক্টোবর প্রীতিলতার ব্রোঞ্জমূর্তি উন্মোচিত হয়।

ঢাকায় যখন প্রীতিলতা পড়তে যান তখন “শ্রীসংঘ” নামে একটি বিপ্লবী সংঘঠন ছিল। এই দলটি প্পকাশ্যে লাঠিখেলা, কুস্তি, ডনবৈঠক, মুষ্টিযুদ্ধশিক্ষা ইত্যাদির জন্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ক্লাব তৈরী করেছিল। ঢাকায় শ্রীসংঘের “দীপালী সঙ্ঘ” নামে একটি মহিলা শাখা ছিল। লীলা নাগ (বিয়ের পর লীলা রায়) এর নেতৃত্বে এই সংগঠনটি নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য কাজ করত। গোপনে তাঁরা মেয়েদের বিপ্লবী সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ ও করত। ইডেন কলেজের শিক্ষক নীলিমাদির মাধ্যমে লীলা রায়ের সাথে প্রীতিলতার পরিচয় হয়েছিল। তাঁদের অনুপ্রেরণায় দীপালী সঙ্ঘে যোগ দিয়ে প্রীতিলতা লাঠিখেলা, ছোরাখেলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি লিখেছিলেন “আই এ পড়ার জন্য ঢাকায় দু’বছর থাকার সময় আমি নিজেকে মহান মাস্টারদার একজন উপযুক্ত কমরেড হিসাবে নিজেকে গডে তোলার চেষ্টা চালিয়েছি”। ১৯২৯ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে সূর্য সেন ও তাঁর সহযোগীরা চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের জেলা সম্মেলন, ছাত্র সম্মেলন, যুব সম্মেলন ইত্যাদি আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। নারী সম্মেলন করবার কোন পরিকল্পনা তখনও ছিলো না কিন্তু পূর্ণেন্দু দস্তিদারের বিপুল উৎসাহের জন্যই সূর্য সেন নারী সম্মেলন আয়োজনের সম্মতি দেন। মহিলা কংগ্রেস নেত্রী লতিকা বোসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রীতিলতা ঢাকা থেকে এবং তাঁর বন্ধু ও সহযোদ্ধা কল্পনা দত্ত কলকাতা থেকে এসে যোগদান করেন। তাঁদের দুজনের আপ্রাণ চেষ্টা ছিল সূর্য সেনের অধীনে চট্টগ্রামের বিপ্লবী দলে যুক্ত হওয়ার কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তাঁদের ফিরে যেতে হয়। ১৯৩০ সালের ১৯ এপ্রিল আই এ পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ফিরে আসেন প্রীতিলতা। আগের দিন রাতেই চট্টগ্রামে বিপ্লবীদের দীর্ঘ পরিকল্পিত আক্রমণে ধ্বংস হয় অস্ত্রাগার, পুলিশ লাইন, টেলিফোন অফিস এবং রেললাইন। এটি “চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ” নামে পরিচয় লাভ করে। চট্টগ্রামের মাটিতে বিপ্লবীদলের এই উত্থান সমগ্র বাংলার ছাত্রসমাজকে উদ্দীপ্ত করে। প্রীতিলতা লিখেছিলেন “পরীক্ষার পর ঐ বছরেরই ১৯শে এপ্রিল সকালে বাড়ি ফিরে আমি আগের রাতে চট্টগ্রামের বীর যোদ্ধাদের মহান কার্যকলাপের সংবাদ পাই। ঐ সব বীরদের জন্য আমার হৃদয় গভীর শ্রদ্ধায় আপ্লুত হল। কিন্তু ঐ বীরত্বপুর্ণ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে না পেরে এবং নাম শোনার পর থেকেই যে মাষ্টারদাকে গভীর শ্রদ্ধা করেছি তাঁকে একটু দেখতে না পেয়ে আমি বেদনাহত হলাম”।

ক্যাবলা'দা এবং গুণু পিসি


১৯৩০ সালে প্রীতিলতা কলকাতার বেথুন কলেজে পড়তে আসেন। দাদা পূর্ণেন্দু দস্তিদার তখন যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র। যুব বিদ্রোহের পর তিনি মধ্য কলকাতায় বিপ্লবী মনোরঞ্জন রায়ের পিসির (গুণু পিসি) বাসায় আশ্রয় নেন। প্রীতিলতা ঐ বাসায় গিয়ে দাদার সঙ্গে প্রায় দেখা করতেন। পূর্ণেন্দু দস্তিদার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলে মনোরঞ্জন রায় (ক্যাবলা’দা নামে পরিচিত) নারী বিপ্লবীদের সংগঠিত করার কাজ করেন। যুব বিদ্রোহের পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার এবং কারাগারে বন্দী নেতাদের সাথে আত্মগোপনে থাকা সূর্য সেনের সাথে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ হত। তাঁরা তখন আরো হামলার পরিকল্পনা করছিল। সূর্য সেন প্রেসিডেন্সী কলেজের কেমিষ্ট্রির ছাত্র মনোরঞ্জন রায়কে গান-কটন এবং বোমা তৈরীর নির্দেশ দেন। তিনি এসব সংগ্রহ করে পলাতক বিপ্লবীদের আশ্রয়দাতা গুণু পিসির বাসায় রাখতেন। এ বাসায় বসে প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত, রেণুকা রায়, কমলা চ্যাটার্জী প্রমুখ বহু গোপন বৈঠক করেন এবং চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের পর মাষ্টারদার প্রেরিত ইস্তেহার সাইক্লোষ্টাইলে ছাপিয়ে কলকাতার বিভিন্ন স্থানে বিতরন করেন। মনোরঞ্জন রায়ের সাথে প্রীতিলতা এবং কল্পনা দত্তের পরিচয়ের পর তিনি বুঝতে পারেন যে এই মেয়ে দুটিই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপ্লবী কাজ করতে সক্ষম হবে। ১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশের নজরদারী এড়িয়ে মনোরঞ্জন রায় কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম এসে সূর্য সেনের হাতে গান-কটন এবং বোমা তুলে দেন। এসময় তিনি জেলে থাকা বিপ্লবীদের সাথে যোগাযোগ করে চিঠির আদান প্রদান এবং কলকাতা থেকে বিস্ফোরক বহন করে আনার বিপদ সম্পর্কে মাষ্টারদার দৃষ্টি আকর্ষন করেন। শহর আর গ্রামের যুবক বয়সীরা পুলিশের চোখে সবচেয়ে বড় সন্দেহভাজন। এ অবস্থায় সূর্য সেন নারী বিপ্লবীদের এসব কাজের দায়িত্ব দেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। কারণ তখনো গোয়েন্দা বিভাগ মেয়েদের সন্দেহ করতো না। মাষ্টারদার অনুমতি পাওয়ার পর নারীদের বিপ্লবের বিভিন্ন কাজে যুক্ত করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় প্রীতিলতার ভাস্কর্য।

রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সান্নিধ্যে প্রীতিলতা


চট্টগ্রামে সূর্য সেনের কাছে বোমা পৌঁছে দিয়ে কলকাতা ফেরত আসার একদিন পরেই ২৪ নভেম্বর মনোরঞ্জন রায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।[৪৫] সে সময়ে টি জে ক্রেগ বাংলার ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ পদে নতুন দায়িত্ব নিয়ে চট্টগ্রাম সফরে আসেন। তাঁকে হত্যা করার জন্য মাষ্টার’দা রামকৃষ্ণ বিশ্বাস এবং কালীপদ চক্রবর্তীকে মনোনীত করলেন। পরিকল্পনা অনু্যায়ী ১৯৩০ সালের ২রা ডিসেম্বর চাঁদপুর রেলস্টেশনে তাঁরা রিভলবার নিয়ে আক্রমণ চালায় কিন্তু ভুল করে তাঁরা মিঃ ক্রেগের পরিবর্তে চাঁদপুরের এস ডি ও তারিণী মুখার্জিকে হত্যা করেন। সেদিনেই পুলিশ বোমা আর রিভলবার সহ রামকৃষ্ণ বিশ্বাস এবং কালীপদ চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করে।[৪৬][৪৭] এই বোমাগু্লোই কলকাতা থেকে মনোরঞ্জন রায় চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন। তারিণী মুখার্জি হত্যা মামলার রায়ে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের মৃত্যুদন্ড এবং কালীপদ চক্রবর্তীকে নির্বাসন দন্ড দেয়া হয়।[৪৮] ব্যয়বহুল বলে আলিপুর জেলের ফাঁসির সেলে মৃত্যু গ্রহণের প্রতীক্ষারত রামকৃষ্ণের সাথে চট্টগ্রাম থেকে আত্নীয়দের মধ্যে কেউ দেখা করতে আসা সম্ভব ছিল না। এ খবর জানার পর মনোরঞ্জন রায় প্রীতিলতার কাছে লেখা এক চিঠিতে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে দেখা করার চেষ্টা করতে অনুরোধ করেন। মনোরঞ্জন রায়ের মা হিজলী জেলে ছেলের সাথে দেখা করতে গেলে গোপনে তিনি প্রীতিলতাকে লেখা চিঠিটা তাঁর হাতে দেন।[৪৯] গুনু পিসির উপদেশ অনুযায়ী প্রীতিলতা মৃত্যুপ্রতীক্ষারত রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে দেখা করার জন্য আলিপুর জেল কর্তৃপক্ষের কাছে “অমিতা দাস” ছদ্মনামে “কাজিন” পরিচয় দিয়ে দরখাস্ত করেন।[৫০] জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে তিনি প্রায় চল্লিশবার রামকৃষ্ণের সাথে দেখা করেন।[৫১] এ সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন “তাঁর (রামকৃষ্ণ বিশ্বাস) গাম্ভীর্যপুর্ণ চাউনি, খোলামেলা কথাবার্তা, নিঃশঙ্ক চিত্তে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা, ঈশ্বরের প্রতি অচলা ভক্তি, শিশুসুলভ সারল্য, দরদীমন এবং প্রগাঢ় উপলব্দিবোধ আমার উপর গভীর রেখাপাত করল। আগের তুলনায় আমি দশগুন বেশি কর্মতৎপর হয়ে উঠলাম। আত্মাহুতি দিতে প্রস্তুত এই স্বদেশপ্রেমী যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ আমার জীবনের পরিপূর্ণতাকে অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিল।”[৫২] ১৯৩১ সালের ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসী হয়।[২৬] এই ঘটনা প্রীতিলতার জীবনে এক আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে। তাঁর ভাষায় “রামকৃষ্ণদার ফাঁসীর পর বিপ্লবী কর্মকান্ডে সরাসরি যুক্ত হবার আকাঙ্ক্ষা আমার অনেক বেড়ে গেল।
দীর্ঘপ্রতীক্ষিত সময়ের অবসানঃ মাষ্টারদার সাথে সাক্ষাত


রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসীর পর আরো প্রায় নয় মাসের মতো প্রীতিলতাকে কলকাতায় থেকে যেতে হয় বি এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য।[৫২] পরীক্ষা দিয়ে প্রীতিলতা কলকাতা থেকে চট্টগ্রামে বাড়ি এসে দেখেন তাঁর পিতার চাকরি নাই। সংসারের অর্থকষ্ট মেটানোর জন্য শিক্ষকতাকে তিনি পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন।[৫৩] চট্টগ্রামে বিশিষ্ট দানশীল ব্যাক্তিত্ব অপর্ণাচরণ দে’র সহযোগিতায় তখন নন্দনকাননে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নন্দনকানন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (বর্তমানে অপর্ণাচরণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়)। তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন।[৫৪] স্কুলে যাওয়া, প্রাইভেট পড়ানো, মাকে সাংসারিক কাজে সাহায্য করে তাঁর দিনগুলো কাটছিল। কিন্তু তিনি লিখেছেন “১৯৩২ সালে বি এ পরীক্ষার পর মাষ্টারদার সাথে দেখা করবই এই প্রত্যয় নিয়ে বাড়ী ফিরে এলাম”।[৫২] বিপ্লবী মাষ্টারদা সূর্য সেনের সাথে সাক্ষাতের আগ্রহের কথা তিনি কল্পনা দত্তকে বলেন। প্রীতিলতা কলকাতা থেকে আসার এক বছর আগে থেকেই কল্পনা দত্ত বেথুন কলেজ থেকে বদলী হয়ে চট্টগ্রাম কলেজে বি এস সি ক্লাসে ভর্তি হন। সেজন্য প্রীতিলতার আগেই কল্পনা দত্তের সাথে মাষ্টারদার দেখা হয়।[৫৫] ১৯৩১ সালে এই গোপন সাক্ষাতের সময় আত্মগোপনে থাকা মাষ্টারদার সাথে ছিলেন বিপ্লবী নির্মল সেন, তারকেশ্বর দস্তিদার, শৈলেশ্বর চক্রবর্তী এবং কালীকিংকর দে।[৫১] মাষ্টারদা ঐ সাক্ষাতের সময় কল্পনা দত্তের কাছ থেকে প্রীতিলতা সম্পর্কিত খোঁজ খবর জানতে চান।[৫৬] এরমধ্যে একবার মাষ্টারদার সংগঠন চালানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে কিছু অর্থের প্রয়োজন দেখা দিল। প্রীতিলতার বাবা সংসারের খরচ চালানোর জন্য মাসিক বেতনের পুরো টাকাটা প্রীতিলতার হাতে দিতেন। তিনি ঐ টাকাটা সংগঠনের কাজে দিয়ে দিতে চাইলেন। কিন্তু তা নিতে কল্পনা দত্ত আপত্তি করায় প্রীতিলতা কেঁদে বলেন “গরিব দেখে আমাদের টাকা নিতে চান না। আমি যে নিষ্ঠাবান কর্মী হতে পারব তার প্রমাণ করার সুযোগও কি আমায় দেবেন না?”।[৫৭][৫৮] প্রীতিলতার প্রবল আগ্রহের কারণেই কল্পনা দত্ত একদিন রাতে গ্রামের এক ছোট্ট কুটিরে তাঁর সাথে নির্মল সেনের পরিচয় করিয়ে দেন। ১৯৩২ সালের মে মাসের গোড়ার দিকে ঐ সাক্ষাতে নির্মল সেন প্রীতিলতাকে পরিবারের প্রতি কেমন টান আছে তা জানতে চাইলেন। জবাবে তিনি বলেন “টান আছে। কিন্তু duty to family-কে duty to country-র কাছে বলি দিতে পারব”।[৫৯] যুব বিদ্রোহের পর বিশৃঙ্খল হয়ে পড়া সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কাজে মাষ্টারদা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার কারণে প্রীতিলতার সাথে সে রাতে তাঁর দেখা হয়নি। প্রীতিলতার সাথে এই সাক্ষাতের কথা বলেতে গিয়ে মাষ্টারদা লিখেছেন “অল্প কয়েকদিন পরেই নির্মলবাবুর সঙ্গে আমার দেখা হতেই নির্মলবাবু আমায় বললঃ আমি রাণীকে (প্রীতিলতার ডাক নাম) কথা দিয়েছি আপনার সঙ্গে দেখা করাব, সে এক সপ্তাহের জন্য যে কোন জায়গায় আসতে রাজ়ী আছে। রামকৃষ্ণের সঙ্গে সে ফাঁসীর আগে দেখা করেছে শুনেই তার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা হয়েছিল। তার দেখা করার ব্যাকুলতা শুনে রাজী হলাম এবং কয়েকদিনের মধ্যে (মে মাসের শেষের দিকে) তাকে আনার ব্যবস্থা করলাম”।[৫৬] মাষ্টারদা এবং প্রীতিলতার প্রথম সাক্ষাতের বর্ণনাতে মাষ্টারদা লিখেছেন “তার চোখেমুখে একটা আনন্দের আভাস দেখলাম। এতদূর পথ হেঁটে এসেছে, তার জন্য তার চেহারায় ক্লান্তির কোন চিহ্নই লক্ষ্য করলাম না। যে আনন্দের আভা তার চোখে মুখে দেখলাম, তার মধ্যে আতিশয্য নেই, Fickleness নেই, Sincerity শ্রদ্ধার ভাব তার মধ্যে ফুটে উঠেছে। একজন উচ্চশিক্ষিত cultured lady একটি পর্ণকুটিরের মধ্যে আমার সামনে এসে আমাকে প্রণাম করে উঠে বিনীতভাবে আমার দিকে দাঁড়িয়ে রইল, মাথায় হাত দিয়ে নীরবে তাকে আশীর্ব্বাদ করলাম..."।[৬০] রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে তার দেখা হও্য়ার ইতিবৃত্ত, রামকৃষ্ণের প্রতি তার শ্রদ্ধা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রীতিলতা প্রায় দুই ঘন্টার মতো মাষ্টারদার সাথে কথা বলেন। মাষ্টারদা আরো লিখেছেন “তার action করার আগ্রহ সে পরিষ্কার ভাবেই জানাল। বসে বসে যে মেয়েদের organise করা, organisation চালান প্রভৃতি কাজের দিকে তার প্রবৃত্তি নেই, ইচ্ছাও নেই বলে”। তিন দিন ধরে ধলঘাট গ্রামে সাবিত্রী দেবীর বাডিতে অবস্থানকালে আগ্নেয়াস্ত্র triggering এবং targeting এর উপর প্রীতিলতা প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন।
বিপ্লবী কর্মকান্ড
ধলঘাটে সংঘর্ষ
ধলঘাট সংঘর্ষের স্থানে নিহত বিপ্লবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভের ধ্বংসাবশেষ।
## শহীদ মিনারের খুদাই করা অংশ।
পূর্ণেন্দু দস্তিদারের নির্মিত শহীদ মিনারের গায়ে মার্বেল পাথরের স্মৃতিফলক।
প্রীতিলতার স্মৃতিতে নির্মিত শহীদ মিনার।
## এই ছবিটি চট্টগ্রাম (বাংলাদেশ) এর পটিয়া থানার ধলঘাটে অবস্থিত ১৯৭০ সালে নির্মিত প্রীতিলতা ও অর্ধেন্দু দস্তিদার স্মরনে শহীদ মিনার এর স্থিরচিত্র । অর্ধেন্দু দস্তিদারের বড় ভাই পূর্ণেন্দু দস্তিদার এই শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। এটি প্রীতিলতার জন্মস্থানের সন্মূখে নির্মাণ করা হয়। এই ছবিটি ধারন করার সময় শহীদ মিনারটিতে অবহেলা ও অযত্নের ছাপ স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
Image may contain: 1 person, plant and outdoor
১৯৩২ সাল--চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের দুই বছর অতিক্রম হয়ে গেল। ইতোমধ্যে বিপ্লবীদের অনেকেই নিহত এবং অনেকেই গেপ্তার হয়েছেন। এই বছরগুলোতে আক্রমণের নানা পরিকল্পনার পরেও শেষ পর্যন্ত বিপ্লবীরা নুতন কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারে নাই। এসব পরিকল্পনার মূলে ছিলেন মাষ্টারদা এবং নির্মল সেন। এই দুজন আত্মগোপণকারী বিপ্লবী তখনো গ্রাম থেকে গ্রামে বিভিন্ন আশ্রয়স্থলে ঘুরে ঘুরে সাংগঠনিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন।এই আশ্রয়স্থলগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ধলঘাটে সাবিত্রী দেবীর টিনের ছাউনি দেয়া মাটির দোতলা বাড়িটা।পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামটা ছিল বিপ্লবীদের অতি শক্তিশালী গোপন আস্তানা। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন এবং জালালাবাদ যুদ্ধের পর থেকে এই গ্রামে ছিলো মিলিটারি ক্যাম্প। এই ক্যাম্প থেকে সেনারা বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপনরত বিপ্লবীদের ধরার চেষ্টা করত।[৬৩] সাবিত্রী দেবীর বাড়ি ছিল ঐ ক্যাম্প থেকে দশ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। বিপ্লবীদের কাছে ঐ বাড়ির গোপন নাম ছিল “আশ্রম”।[৬৪] বিধবা সাবিত্রী দেবী এক ছেলে এবং বিবাহিতা মেয়েকে নিয়ে ঐ বাড়িতে থাকতেন।[৬৩] বিপ্লবীদের কাছে তিনি ছিলেন “সাবিত্রী মাসিমা”।[৬২] এই আশ্রমে বসে সূর্য সেন এবং নির্মল সেন অন্যান্য বিপ্লবীদের সাথে সাক্ষাত করতেন এবং আলোচনা করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেন। অনেক সময় এই বাড়িতেই তাঁরা দেশ বিদেশের বিপ্লবীদের লেখা বই পড়ে এবং নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা লিখে সময় কাটাতেন। ১৯৩২ সালের ১২ জুন তুমুল ঝড় বৃষ্টির দিনে মাষ্টারদার পাঠানো এক লোক প্রীতিলতাকে আশ্রমে নিয়ে আসেন।[৬৪] বাড়িতে প্রীতিলতা তাঁর মাকে সীতাকুন্ড যাবার কথা বলেন। মাষ্টারদা এবং নির্মল সেন ছাড়া ঐ বাড়িতে তখন ডিনামাইট ষড়যন্ত্র মামলার পলাতক আসামী তরুন বিপ্লবী অপূর্ব সেন (ভোলা) অবস্থান করছিলেন। ১৩ জুন সন্ধ্যায় সূর্য সেন এবং তাঁর সহযোগীদের সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে অবস্থানের কথা পটিয়া পুলিশ ক্যাম্প জানতে পারে। এর আগে মে মাসেই ইংরেজ প্রশাসন মাষ্টারদা এবং নির্মল সেনকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় ধরিয়ে দিতে পারলে ১০,০০০ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। ক্যাম্পের অফিসার-ইন-চার্জ ক্যাপ্টেন ক্যামেরন খবরটা জানার পর ঐ বাড়িতে অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পুরস্কার এবং পদোন্নতির আশা নিয়ে ক্যাপ্টেন ক্যামেরন দুজন সাব-ইন্সপেক্টর, সাতজন সিপাহী, একজন হাবিলদার এবং দুজন কনষ্টেবল নিয়ে রাত প্রায় ৯টার দিকে ধলঘাটের ঐ বাড়িতে উপস্থিত হন।[৬৫] এর একটু আগেই মাষ্টারদা এবং প্রীতিলতা দোতলা বাড়িটার নীচতলার রান্নাঘরে ভাত খেতে বসেছিলেন। জ্বরের কারণে নির্মল সেন এবং ভোলা রাতের খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে উপরের তলায় শুয়ে ছিলেন। মাষ্টারদার সাথে খেতে বসে অস্বস্তি বোধ করায় প্রীতিলতা দৌড়ে উপরে চলে যান। প্রীতিলতার লজ্জা দেখে নির্মল সেন খুব হেসেছিলেন।এমন সময় মাষ্টারদা ঘরের ভিতরের মই বেয়ে দোতলায় উঠে বলেন “নির্মলবাবু, পুলিশ এসেছে”। মাষ্টারদা প্রীতিলতাকে নিচে নেমে এসে মেয়েদের সাথে থাকার নির্দেশ দেন। ততক্ষনে সিপাহী এবং কনষ্টেবলরা ঘর ঘিরে ফেলেছে। ক্যাপ্টেন ক্যামেরন এবং সাব-ইন্সপেক্টর মনোরঞ্জন বোস ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে ঘরের একতলায় থাকা সাবিত্রী দেবী ও তাঁর ছেলে মেয়েকে দেখতে পান। “ঘরে আর কে আছে?” এ প্রশ্ন করে কোন উত্তর না পাওয়া অভিযান পরিচালনাকারীরা এসময় ঘরের উপরের তলায় পায়ের আওয়াজের শব্দ শুনতে পান।[৬৭] ক্যাপ্টেন ক্যামেরন হাতে রিভলবার নিয়ে ঘরের বাইরের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সিঁড়ির মাথায় পৌঁছে বন্ধ দরজায় ধাক্কা দিতেই নির্মল সেনের করা দুইটা গুলিতে ক্যাপ্টেন ক্যামেরন মৃত্যুবরন করেন। গুলির শব্দ পাওয়ার পরেই ঘরের চারিদিকে থাকা সৈন্যরা চারিদিক থেকে প্রচন্ড গুলিবর্ষণ শুরু করে। একটা গুলি এসে নির্মল সেনের বুকে লাগে এবং প্রচুর রক্তক্ষরনে তাঁর মৃত্যু হয়। টাকা পয়সা এবং কাগজপত্র গুছিয়ে প্রীতিলতা এবং অপুর্ব সেনকে সঙ্গে নিয়ে মাষ্টারদা অন্ধকারে ঘরের বাইরে আসেন। এই সময়ে আমের শুকনো পাতায় পা পড়ার শব্দ পেয়ে আশেপাশে থাকা সিপাহীদের চালানো গুলিতে সবার আগে থাকা অপুর্ব সেন মারা যান। মাষ্টারদা আর প্রীতিলতা সেই রাতে কচুরিপানা ভরা পুকুরে সাঁতার কেটে আর কর্দমাক্ত পথ পাড়ি দিয়ে পটিয়ার কাশীয়াইশ গ্রামে দলের কর্মী সারোয়াতলী স্কুলের দশম শ্রেনীর ছাত্র মনিলাল দত্তের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছান।[৭২] মণিলাল ঐ বাড়ির গৃহশিক্ষক ছিলেন।[৭১] মাষ্টারদার জন্য রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত বিবরন লিখে ধলঘাটে এনেছিলেন প্রীতিলতা। সে পান্ডুলিপি পুকুরের মধ্যে হারিয়ে গেলো।[৭২] তাঁদেরকে নিরাপদ কোন আশ্রয়ে নিয়ে যেতে বলেন মাষ্টারদা। মণিলাল দত্ত তাদেরকে ধলঘাট হতে ছয় কিলোমিটার দূরে পাহাড়, জঙ্গল এবং নদীর কাছাকাছি একটা গ্রাম জৈষ্ট্যপুরায় নিয়ে যেতে মনস্থির করেন। পুলিশ আসলে পাহাড় এবং জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা যাবে অথবা নদী পার হয়ে অন্য আশ্রয়ে যাওয়া যাবে। অনেক প্রতিকূল পথ অতিক্রমের পর তাঁরা জৈষ্ট্যপুরা গ্রামে বিপ্লবীদের আরেকটা গোপন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছান।[৭২][৭৩] ঐ গুপ্ত আস্তানাটি বিপ্লবীদের কাছে “কুটির” নামে পরিচিত ছিল। ঐ কুটিরে তখন আত্মগোপণে ছিলেন সুশীল দে, কালীকিংকর দে এবং মহেন্দ্র চৌধুরী। সূর্য সেন পরের দিন প্রীতিলতাকে বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে সূর্য সেনের নির্দেশে মণিলাল প্রীতিলতার বাসায় পুলিশের নজরদারী আছে কিনা তা জানতে শহরে আসেন। “সব কিছু ঠিক আছে” জানার পর প্রীতিলতাকে বাড়ি গিয়ে স্কুল শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়। "চট্টগ্রামে সৈন্য ও বিপ্লবীদের সংঘর্য" শিরোনামে ধলঘাট সংঘর্ষের খবরটা ১৫ জুন ১৯৩২ সালে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ঃ


"এইমাত্র সংবাদ আসিয়াছে যে, গতরাত্রে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়ার নিকটে বিপ্লবী ও সৈন্যদের এক সংঘর্য হইয়া গিয়াছে। ফলে গুর্খা বাহিনীর ক্যাপ্টেন ক্যামেরন ও দুইজন বিপ্লবী নিহত হইয়াছেন। বিপ্লবীদের নিকট দুইটি রিভলবার ও গুলি ইত্যাদি পাওয়া গিয়াছে। নিহত বিপ্লবীদের একজনকে নির্মল সেন বলিয়া সনাক্ত করা হইয়াছে।"


আত্মগোপন


ধলঘাট সংঘর্ষের সে রাতেই গোলাগুলিতে ক্যাপ্টেন ক্যামেরনের মৃত্যুর পর পুলিশের এস. আই মনোরঞ্জন বোস পটিয়ার মিলিটারী ক্যাম্পে গিয়ে আরো ত্রিশজন সৈন্য এবং একটা লুইস গান নিয়ে সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে ফিরে আসেন। লুইস গানের গুলিবর্ষণে বাড়িটা প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। সকালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও সেনাধ্যক্ষ মেজর গর্ডন দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। সাবিত্রী দেবী এবং তাঁর পুত্র কণ্যাকে বিপ্লবীদের আশ্রয় দেবার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। কণ্যা স্নেহলতার জবানবন্দিতে আরো তিন যুবক—দীনেশ দাশগুপ্ত, অজিত বিশ্বাস, এবং মনীন্দ্র দাশকে আটক করা হয়। পরবর্তীকালে সাবিত্রী দেবী, তাঁর পুত্র রামকৃষ্ণ, এবং এই তিন যুবককে বিপ্লবীদের আশ্রয় এবং সহায়তা করার দায়ে চার বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। ঘরের ভেতর চালানো তল্লাশীতে রিভলবার, রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের দুইটা ছবি, পাশাপাশি দুইটা মেয়ের ছবি (যার মধ্যে একজন ছিল প্রীতিলতা) সহ কিছু চিঠি এবং দুইটা বইয়ের পান্ডুলিপি পাওয়া যায়।[৭৬] ধলঘাটে ছবি পাওয়ার পর ১৯ জুন পুলিশ বাসায় গিয়ে প্রীতিলতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।[৭৯] ২২ জুন এস.আই শৈলেন্দ্র সেনগুপ্ত এর নেতৃত্বে একটি দল ঐ বাড়িতে আরেক দফা তল্লাশি চালায়। তাঁর নির্দেশে আশে পাশের সব জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করা হয়। জঙ্গল এবং আশেপাশের পুকুরে তল্লাশীতে অনেক কাগজপত্র উদ্ধার করা হয় যা থেকে প্রমাণিত হয় চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের পর আত্মগোপনে থেকে ও বিপ্লবীরা তাঁদের আদর্শের সাথে অভিন্ন বিভিন্ন প্রবন্ধ পড়া এবং সামরিক প্রশিক্ষন চালিয়ে যাচ্ছিল। তল্লাশি অভিযানে কাজিন পরিচয় দিয়ে অমিতা দাশের (প্রীতিলতার) আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসির প্রতীক্ষারত রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে সাক্ষাতের হাতে লেখা একটা বিবরন পাওয়া যায়।[৮০][৮১] ঐ হাতের লেখার সাথে মেলানোর জন্য ৩০ জুন প্রীতিলতার বাসা থেকে পুলিশ তাঁর গানের একটা বই নিয়ে যায়। মাষ্টারদা প্রীতিলতাকে আত্মগোপনের নির্দেশ দেন।[৭৯] ৫ জুলাই মনিলাল দত্ত এবং বীরেশ্বর রায়ের সাথে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে প্রীতিলতা আত্মগোপন করে। ছাত্রী পড়ানোর কথা বলে তিনি বাড়ি ত্যাগ করেছিলেন। পিতা জগবন্ধু ওয়াদ্দেদার অনেক খোঁজ খবর করেও কোন সন্ধান পাননি। ব্যর্থ হয়ে যখন থানায় খবরটা জানানো হল, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ইন্সপেক্টর যোগেন গুপ্ত আরেক নারী বিপ্লবী কল্পনা দত্তের বাড়িতে যান। কল্পনা দত্ত ঐ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখেন “আমাদের বাসায় এসে গোয়েন্দা বিভাগের ইন্সপেক্টর বলেঃ এত শান্তশিষ্ট নম্র মেয়ে ও, এত সুন্দর করে কথা বলতে পারে, ভাবতেও পারি না তার ভিতর এত কিছু আছে! আমাদের খুব ফাঁকি দিয়ে সে পালিয়ে গেল।”[৮২] চট্টগ্রাম শহরের গোপন আস্তানায় কিছু দিন কাটিয়ে প্রীতিলতা পড়ৈকড়া গ্রামের রমণী চক্রবর্তীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বিপ্লবীদের আরেক গোপন আস্তানা এই বাড়িটার সাংকেতিক নাম ছিল “কুন্তলা”।[৮৩] এই বাড়িতে তখন আত্মগোপনে ছিলেন মাষ্টারদা এবং তারকেশ্বর দস্তিদার। প্রীতিলতার আত্মগোপনের খবর ১৩ জুলাই ১৯৩২ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। “চট্টগ্রামের পলাতকা” শিরোনামের এই সংবাদে লেখা হয় “চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার ধলঘাটের শ্রীমতী প্রীতি ওয়াদ্দাদার গত ৫ই জুলাই, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম শহর হইতে অন্তর্ধান করিয়াছেন। তাঁহার বয়স ১৯ বৎসর। পুলিশ তাঁহার সন্ধানের জন্য ব্যস্ত”।[৮৪] প্রীতিলতাকে ধরার জন্য বেঙ্গল পুলিশের সি আই ডি কর্তৃক প্রকাশিত ছবিসহ নোটিশটি ছিল নিম্নরূপঃ[৮৫]


"Waddadar, whose photographs are published above. Photograph No 1 was taken 2 years ago when Miss Prithi was a student of the Dacca Eden Intermediate College and photograph No. 2 (sitting postures), which is a more recent one, was found at the time of search of one Apurba Sen alias Bhola (since deceased), in connection with Dhalghat shooting affray at Chittagong.


A Special “look-out” should be kept for her and when traced, the I.B., C.I.D., Bengal, Calcutta, should be informed by wire. A close, though unobtrusive, surveillance should at the same time be kept on her movements.


Description—Miss Prithi Waddadar, daughter of Jagabandhu Waddadar (Baidya by caste), of Dhalghat, Patiya and Jamalkhana, Chittagong town: age 20/21 (looks younger than her age); dark; medium build; short; ugly in appearance."

ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ
তৎকালীন ইউরোপিয়ান ক্লাব।
ইউরোপিয়ান ক্লাবের সম্মুখের স্মৃতিফলক।

১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের অন্যতম পরিকল্পনা ছিল পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণ। কিন্তু গুড ফ্রাইডের কারণে সেদিনের ঐ পরিকল্পনা সফল করা যায়নি। চট্টগ্রাম শহরের উত্তরদিকে পাহাড়তলী স্টেশনের কাছে এই ক্লাব ছিল ব্রিটিশদের প্রমোদকেন্দ্র। পাহাড় ঘেরা এই ক্লাবের চতুর্দিকে প্রহরীদের অবস্থান ছিল। একমাত্র শ্বেতাঙ্গরা ব্যতীত এবং ক্লাবের কর্মচারী, বয়-বেয়ারা, দারোয়ান ছাড়া এদেশীয় কেউ ঐ ক্লাবের ধারে কাছে যেতে পারতো না।[৬৪] ক্লাবের সামনের সাইনবোর্ডে লেখা ছিল “ডগ এন্ড ইন্ডিয়ান প্রহিবিটেড”।[৮৬] সন্ধ্যা হতেই ইংরেজরা এই ক্লাবে এসে মদ খেয়ে নাচ, গান এবং আনন্দ উল্লাস করতো। আত্মগোপনকারী বিপ্লবীরা ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের জন্য নুতনভাবে পরিকল্পনা শুরু করে। চট্টগ্রাম শহরের কাছে দক্ষিণ কাট্টলী গ্রামে ঐ ক্লাবেরই একজন বেয়ারা যোগেশ মজুমদারের বাড়িতে বিপ্লবীরা আশ্রয় পেলেন।[৮৪] ১৯৩২ এর ১০ আগষ্ট ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের দিন ধার্য করা হয়। শৈলেশ্বর চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সাতজনের একটা দল সেদিন ক্লাব আক্রমণ করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। শৈলেশ্বর চক্রবর্তীর প্রতিজ্ঞা ছিল ক্লাব আক্রমণের কাজ শেষ হবার পর নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরার যদি সুযোগ থাকে তবুও তিনি আত্মবিসর্জন দেবেন। তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। গভীর রাতে কাট্টলীর সমুদ্রসৈকতে তাঁর মৃতদেহ সমাহিত করা হয়।মাষ্টারদা ১৯৩২ এর সেপ্টেম্বর মাসে ক্লাবে হামলা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এই আক্রমণের দায়িত্ব তিনি নারী বিপ্লবীদের উপর দেবেন বলেন মনস্থির করেছিলেন। কিন্তু সাতদিন আগেই পুলিশের হাতে পুরুষবেশী কল্পনা দত্ত ধরা পরে গেলে আক্রমণে নেতৃত্বের ভার পড়ে একমাত্র নারী বিপ্লবী প্রীতিলতার উপর।[৭৯][৮৯] ২৩ সেপ্টেম্বর এ আক্রমণে প্রীতিলতার পরনে ছিল মালকোঁচা দেওয়া ধুতি আর পাঞ্জাবী, চুল ঢাকা দেবার জন্য মাথায় সাদা পাগড়ি, পায়ে রবার সোলের জুতা। ইউরোপীয় ক্লাবের পাশেই ছিল পাঞ্জাবীদের কোয়ার্টার। এর পাশ দিয়ে যেতে হবে বলেই প্রীতিলতাকে পাঞ্জাবী ছেলেদের মত পোশাক পড়ানো হয়েছিল। আক্রমণে অংশ নেয়া কালীকিংকর দে, বীরেশ্বর রায়, প্রফুল্ল দাস, শান্তি চক্রবর্তী পোষাক ছিল ধুতি আর শার্ট। লুঙ্গি আর শার্ট পরনে ছিল মহেন্দ্র চৌধুরী, সুশীল দে আর পান্না সেন এর। বিপ্লবীদের আশ্রয়দাতা যোগেশ মজুমদার (বিপ্লবীদের দেয়া তাঁর গোপন নাম ছিল জয়দ্রথ) ক্লাবের ভিতর থেকে রাত আনুমানিক ১০টা ৪৫ এর দিকে আক্রমণের নিশানা দেখানোর পরেই ক্লাব আক্রমণ শুরু হয়। সেদিন ছিল শনিবার, প্রায় চল্লিশজন মানুষ তখন ক্লাবঘরে অবস্থান করছিল। তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বিপ্লবীরা ক্লাব আক্রমণ শুরু করে। পূর্বদিকের গেট দিয়ে ওয়েবলি রিভলবার এবং বোমা নিয়ে আক্রমণের দায়িত্বে ছিলেন প্রীতিলতা, শান্তি চক্রবর্তী আর কালীকিংকর দে। ওয়েবলি রিভলবার নিয়ে সুশীল দে আর মহেন্দ্র চৌধুরী ক্লাবের দক্ষিণের দরজা দিয়ে এবং ৯ ঘড়া পিস্তল নিয়ে বীরেশ্বর রায়, রাইফেল আর হাতবোমা নিয়ে পান্না সেন আর প্রফুল্ল দাস ক্লাবের উত্তরের জানালা দিয়ে আক্রমণ শুরু করেছিলেন। প্রীতিলতা হুইসেল বাজিয়ে আক্রমণ শুরুর নির্দেশ দেবার পরেই ঘন ঘন গুলি আর বোমার আঘাতে পুরো ক্লাব কেঁপে কেঁপে উঠছিল। ক্লাবঘরের সব বাতি নিভে যাবার কারণে সবাই অন্ধকারে ছুটোছুটি করতে লাগল। ক্লাবে কয়েকজন ইংরেজ অফিসারের কাছে রিভলবার ছিল। তাঁরা পাল্টা আক্রমণ করল। একজন মিলিটারী অফিসারের রিভলবারের গুলিতে প্রীতিলতার বাঁ-পাশে গুলির আঘাত লাগে। প্রীতিলতার নির্দেশে আক্রমণ শেষ হলে বিপ্লবী দলটার সাথে তিনি কিছুদূর এগিয়ে আসেন। পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী সেদিনের এই আক্রমণে মিসেস সুলিভান নামে একজন নিহত হয় এবং চারজন পুরুষ এবং সাত জন মহিলা আহত হয়।
মৃত্যু এবং অতঃপর ইউরোপিয়ান ক্লাবের পাশের এই স্থানে প্রীতিলতা আত্মাহুতি দেন।

পাহাড়তলী ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ শেষে পূর্বসিদ্বান্ত অনুযায়ী প্রীতিলতা পটাসিয়াম সায়ানাইড মুখে পুরে দেন। কালীকিংকর দে’র কাছে তিনি তাঁর রিভলবারটা দিয়ে আরো পটাশিয়াম সায়ানাইড চাইলে, কালীকিংকর তা প্রীতিলতার মুখের মধ্যে ঢেলে দেন।
বাংলা ভাষার উইকিসংকলনে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত মৌলিক রচনা রয়েছে: মায়ের কাছে প্রীতিলতার শেষ পত্র

ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণে অংশ নেয়া অন্য বিপ্লবীদের দ্রুত স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রীতিলতা। পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া প্রীতিলতাকে বিপ্লবী শ্রদ্ধা জানিয়ে সবাই স্থান ত্যাগ করে। পরদিন পুলিশ ক্লাব থেকে ১০০ গজ দূরে মৃতদেহ দেখে পরবর্তীতে প্রীতিলতাকে সনাক্ত করেন। তাঁর মৃতদেহ তল্লাশীর পর বিপ্লবী লিফলেট, অপারেশনের পরিকল্পনা, বিভলবারের গুলি, রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ছবি এবং একটা হুইসেল পাওয়া যায়। ময়না তদন্তের পর জানা যায় গুলির আঘাত তেমন গুরুতর ছিল না এবং পটাশিয়াম সায়ানাইড ছিল তাঁর মৃত্যুর কারণ।


বেঙ্গল চিফ সেক্রেটারী প্রীতিলতার মৃত্যুর পর লন্ডনে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো একটা রিপোর্টে লেখেনঃ

"Pritilata had been closely associated with, if not actually the mistress of, the terrorist Biswas who was hanged for the murder of Inspector Tarini Mukherjee, and some reports indicate that she was the wife of Nirmal Sen who was killed while attempting to evade arrest of Dhalghat, where Captain Cameron fell."

প্রীতিলতার মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের অবস্থা নিয়ে কল্পনা দত্ত লিখেছেনঃ “প্রীতির বাবা শোকে দুঃখে পাগলের মত হয়ে গেলেন, কিন্তু প্রীতির মা গর্ব করে বলতেন, ‘আমার মেয়ে দেশের কাজে প্রাণ দিয়েছে'। তাঁদের দুঃখের পরিসীমা ছিল না, তবু তিনি সে দুঃখেকে দুঃখ মনে করেননি। ধাত্রীর কাজ নিয়ে তিনি সংসার চালিয়ে নিয়েছেন, আজো তাঁদের সেভাবে চলছে। প্রীতির বাবা প্রীতির দুঃখ ভুলতে পারেননি। আমাকে দেখলেই তাঁর প্রীতির কথা মনে পড়ে যায়, দীর্ঘনিশ্বাস ফেলেন”।

কল্পনা দত্ত ১৯৩০ সালে প্রীতিলতার বাড়িতে এক আলাপচারিতা প্রসঙ্গে লিখেছেনঃ “কথা হচ্ছিল, পাঁঠা কাটতে পারব কি না। আমি বলেছিলাম, ‘নিশ্চয় পারব, আমার মোটেই ভয় করে না’। প্রীতি উত্তর দিয়েছিল ‘ভয়ের প্রশ্ন না, কিন্তু আমি পারব না নিরীহ একটা জীবকে হত্যা করতে’। একজন তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন করল ‘কী, দেশের স্বাধীনতার জন্যও তুমি অহিংস উপায়ে সংগ্রাম করতে চাও?’ আমার মনে পড়ে প্রীতির স্পষ্ট জবাব, ‘স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিতেও পারব, প্রাণ নিতে মোটেই মায়া হবে না। কিন্তু নিরীহ জীব হত্যা করতে সত্যি মায়া হয়, পারব না।’”


প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার যিনি প্রীতিলতা ওয়াদ্দের নামেও পরিচিত (জন্ম: মে ৫, ১৯১১; মৃত্যু সেপ্টেম্বর ২৪, ১৯৩২) ডাকনাম রাণী, ছদ্মনাম ফুলতার, একজন বাঙালী ছিলেন, যিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী মহিলা শহীদ ব্যক্তিত্ব। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী সূর্য সেনের নেতৃত্বে তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং জীবন বিসর্জন করেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব দখলের সময় তিনি ১৫ জনের একটি বিপ্লবী দল পরিচালনা করেন।এই ক্লাবটিতে একটি সাইনবোর্ড লাগানো ছিলো যাতে লেখা ছিলো "কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ"। প্রীতিলতার দলটি ক্লাবটি আক্রমণ করে এবং পরবর্তিতে পুলিশ তাদের আটক করে। পুলিশের হাতে আটক এড়াতে প্রীতিলতা সায়ানাইড গলাধঃকরন করে আত্মহত্যা করেন।
প্রীতিলতার জন্মস্থানের ধ্বংসাবশেষ। ভিটা বাড়ীর কোন চিহ্নই আর অবশিষ্ট নেই।

শৈশব

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ১৯১১ সালের ৫ই মে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মিউনিসিপ্যাল অফিসের হেড কেরানী জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার এবং মাতা প্রতিভাদেবী। তাঁদের ছয় সন্তানঃ মধুসূদন, প্রীতিলতা, কনকলতা, শান্তিলতা, আশালতা ও সন্তোষ। তাঁদের পরিবারের আদি পদবী ছিল দাশগুপ্ত। পরিবারের কোন এক পূর্বপুরুষ নবাবী আমলে “ওয়াহেদেদার” উপাধি পেয়েছিলেন, এই ওয়াহেদেদার থেকে ওয়াদ্দেদার বা ওয়াদ্দার। শৈশবে পিতার মৃত্যুর পর জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার তাঁর পৈতৃক বাড়ি ডেঙ্গাপাড়া সপরিবারে ত্যাগ করেন। তিনি পটিয়া থানার ধলঘাট গ্রামে মামার বাড়িতে বড় হয়েছেন। এই বাড়িতেই প্রীতিলতার জন্ম হয়। আদর করে মা প্রতিভাদেবী তাঁকে “রাণী” ডাকতেন। পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম শহরের আসকার খানের দীঘির দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ে টিনের ছাউনি দেয়া মাটির একটা দোতলা বাড়িতে স্থায়ীভাবে থাকতেন ওয়াদ্দেদার পরিবার। অন্তর্মুখী, লাজুক এবং মুখচোরা স্বভাবের প্রীতিলতা ছেলেবেলায় ঘর ঝাঁট দেওয়া, বাসন মাজা ইত্যাদি কাজে মা-কে সাহায্য করতেন।


শিক্ষাজীবন
প্রীতিলতার ম্যাট্রিকুলেশন পাশের সনদ।


ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা বিদ্যালয় ছিল প্রীতিলতার প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯১৮ সালে তিনি এই স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন।[১৪] প্রতি ক্লাসে ভালো ফলাফলের জন্য তিনি সব শিক্ষকের খুব প্রিয় ছিলেন। সেই শিক্ষকের একজন ছিলেন ইতিহাসের ঊষাদি। তিনি প্রীতিলতাকে পুরুষের বেশে ঝাঁসীর রানী লক্ষীবাই এর ইংরেজ সৈন্যদের সাথে লড়াইয়ের ইতিহাস বলতেন। স্কুলে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন ছিলেন কল্পনা দত্ত (পরবর্তীকালে বিপ্লবী)। এক ক্লাসের বড় প্রীতিলতা কল্পনার সাথে ব্যাডমিন্টন খেলতেন।তাঁদের স্বপ্নের কথা লিখেছেন কল্পনা দত্তঃ "কোন কোন সময় আমরা স্বপ্ন দেখতাম বড় বিজ্ঞানী হব। সেই সময়ে ঝাঁসীর রানী আমাদের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করে। নিজেদেরকে আমরা অকুতোভয় বিপ্লবী হিসাবে দেখা শুরু করলাম।"স্কুলে আর্টস এবং সাহিত্য প্রীতিলতার প্রিয় বিষয় ছিলো।১৯২৬ সালে তিনি সংস্কৃত কলাপ পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেন। ১৯২৮ সালে তিনি কয়েকটি বিষয়ে লেটার মার্কস পেয়ে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। অঙ্কের নম্বর খারাপ ছিল বলে তিনি বৃত্তি পাননি।ম্যাট্রিক পরীক্ষার পর বন্ধের সময় তিনি নাটক লিখেন এবং মেয়েরা সবাই মিলে সে নাটক চৌকি দিয়ে তৈরী মঞ্চে পরিবেশন করেন। পরীক্ষার ফলাফল দেওয়ার সময়টাতে তাঁর বাড়িতে এক বিয়ের প্রস্তাব আসে। কিন্তু প্রীতিলতার প্রবল আপত্তির কারণে বিয়ের ব্যবস্থা তখনকার মতো স্থগিত হয়ে যায়।আই.এ. পড়ার জন্য তিনি ঢাকার ইডেন কলেজে ভর্তি হন। এ কলেজ়ের ছাত্রী নিবাসের মাসিক থাকা খাওয়ার খরচ ছিল ১০ টাকা এবং এর মধ্যে কলেজের বেতন ও হয়ে যেত। এ কারণেই অল্প বেতনের চাকুরে জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার মেয়েকে আই.এ. পড়তে ঢাকায় পাঠান। ১৯৩০ সালে আই.এ. পরীক্ষায় তিনি মেয়েদের মধ্যে প্রথম এবং সবার মধ্যে পঞ্চম স্থান লাভ করে। এই ফলাফলের জন্য তিনি মাসিক ২০ টাকার বৃত্তি পান এবং কলকাতার বেথুন কলেজ়ে বি এ পড়তে যান। বেথুন কলেজে মেয়েদের সাথে তাঁর আন্তরিক সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল। বানারসী ঘোষ স্ট্রীটের হোস্টেলের ছাদে বসে প্রীতিলতার বাশীঁ বাজানো উপভোগ করত কলেজের মেয়েরা।প্রীতিলতার বি.এ. তে অন্যতম বিষয় ছিল দর্শন। দর্শনের পরীক্ষায় তিনি ক্লাসে সবার চাইতে ভাল ফলাফল লাভ করতেন। এই বিষয়ে তিনি অনার্স করতে চেয়েছিলেন কিন্তু বিপ্পবের সাথে যুক্ত হবার তীব্র আকাঙ্ক্ষার কারণে অনার্স পরীক্ষা তাঁর আর দেয়া হয়নি। ১৯৩২ সালে ডিসটিংশান নিয়ে তিনি বি.এ. পাশ করেন।কিন্তু, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় কৃতিত্বের সাথে স্নাতক পাস করলেও তিনি এবং তাঁর সঙ্গী বীণা দাসগুপ্তর পরীক্ষার ফল স্থগিত রাখা হয়। অবশেষে তাঁদেরকে ২২ মার্চ, ২০১২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে মরণোত্তর স্নাতক ডিগ্রী প্রদান করা হয়।

Monday, February 19, 2018

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের কতটুকু আপনার জানা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের কতটুকু আপনার জানা। আপনি জেনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মেনে চলেন নাকি অন্যের নিকট শুনে বিশ্বাস আত্মবিশ্বাসে মুজিবসেনা বলে নিজেকে দাবী করেন? 

একটু সময় নিয়ে মিলিয়ে নিন। ১৯৩৮-১৯৭৫ পর্যন্ত।
 জন্ম: ১৯২০ সালের সতের মার্চ ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে।
১৯৩৮ সালে তৎকালীন বাংলার শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে পরিচয় ও সাহচর্য লাভ।
" " মিথ্যা অভিযোগে প্রথম বারের মত গ্রেপ্তার, সাতদিন পর জামিন লাভ।
১৯৩৯ সালে সোহরাওয়ার্দীর সাথে কলকাতায় যোগাযোগ, গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলীম লীগ গঠন। শেখ মুজিব সাধারণ সম্পাদক হন।
১৯৪১ সালে ম্যাট্রিক পাশ।
" " কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে র্ভতি।
১৯৪৩ সালে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য হন।
১৯৪৬ সালের নির্বাচনে মুসলীম লীগের পক্ষে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন। সোহরাওয়ার্দী সাহেব প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৪৬ সালের জুলাইয়ে কলকাতা ও বিহারে হিন্দু মুসলমান দাংগা বন্ধে ও আহতদের পূর্নবাসনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন।
১৯৪৭ এ পাকিস্তান ভাগের সময় আসামের জেলা সিলেটকে বাংলাদেশে রাখার বিষয়ে গনভোটে সক্রিয় কার্যক্রম চালান।
" " ব্যারাক পুরে মহাত্মা গান্ধীর সাথে সাক্ষাত, তাকে কলকাতা-বিহার দাংগায় তোলা নৃশংস হত্যাকান্ডের ছবি এলবাম আকারে উপহার প্রদান।
" " কলকাতা ত্যাগ, ঢাকায় আগমন।
" " ঢাকায় কনফারেন্স, যুব প্রতিষ্ঠান গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত, নাম গণতান্ত্রিক যুবলীগ, সাবজেক্ট কমিটি গঠন। শেখ মুজিব কমিটির সদস্য। পরবর্তীতে কমিউনিস্টদের
অনৈতিক সংখ্যাধিক্য ও বাড়াবাড়ির কারণে শেখ মুজিব সহ মুসলিম লীগ পন্থীরা সংগঠন ত্যাগ করেন।
১৯৪ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন। (তখনও মুসলিম লীগের সদস্য থাকায় নিজে দায়িত্ব নেননি, তবে তিনিই প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন) নইমউদ্দিন কনভেনর হলেও মুল দায়িত্ব ছিল
বঙ্গবন্ধুর উপর। এক মাসের মধ্যে প্রায় সকল জেলায় কমিটি গঠন।
"" " মুসলিম লীগ ত্যাগ।
১৯৪৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী করাচিতে পাকিস্তান সংবিধান কমিটির সভায় উদুর্কে রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে আলোচনা। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সভা।
" " পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিসের যুক্ত ভাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন।
" " ফরিদপুর, যশোর হয়ে দৌলতপুর, খুলনা ও বরিশাল সহ জেলায় জেলায় ছাত্রসভায় বক্তব্য প্রদান করেন।
" " ১১ মার্চ বাংলা ভাষা দিবস পালনের দায়ে মিছিলে লাঠিচার্জের শিকার ও দ্বিতীয় বারের মত গ্রেপ্তার হন। পাঁচদিন জেলে থাকেন।
" " ১৫ তারিখ মুক্তি লাভ, ১৬ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রসভায় প্রথমবারের মত সভাপতিত্ব করেন।
" " টাংগাইলে দুটো আইনসভার আসন খালী হওয়ায় মুসলীম লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মওলানা ভাসানীর সাথে আলোচনা। মওলানা ভাসানী খাজা নাজিমউদ্দীনের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে নির্বাচন করেন। পরে মওলানা ভাসানীর আসন নির্বাচনী হিসেব দাখিল না করার অপরাধে বাতিল হয়।
" " টাংগাইল ও নারায়ন গন্জে মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে সভা। শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের ঢাকায় আগমন ও বিভিন্ন জায়গায় সভা।
১৯৪৯ সাল
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিন্ম বেতনভোগী কর্মচারীদের আন্দোলনে সংহতি ও সহযোগিতা
**** আন্দোলনে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত
**** পুরোনো লীগ কর্মী ও নেতাদের সাথে আলোচনা। নতুন দল গঠন করা যায় কিনা এ ব্যাপারে। নেতার সংকট। আসাম ফেরত মওলানা ভাসানীর সাথে আলোচনার সিদ্ধান্ত। আসাম ময়মনসিংহ, পাবনা ও রংপুরে তিনি পরিচিত হলেও পূর্ব বাংলার সাধারণ জনগণ তাকে তেমন জানতনা। কারণ তিনি বেশিরভাগ সময় আসামেই কাটিয়েছেন। মুসলীম লীগের নেতা হিসেবে আসামের বাংগাল খেদাও আন্দোলনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন। অন্যদিকে সীমান্ত প্রদেশে পীর মানকি শরীফ আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে সংগঠন গঠন করেছেন।
*** ছাত্রলীগের কনভেনর নইমউদ্দিন বন্ড দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব ফেরত। সভার মাধ্যমে তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার। (সম্ভবত শেখ মুজিব ছাত্রলীগের সভাপতি হন আমি নিশ্চিত নই) শাস্তিমুলক বহিস্কার প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষনা।
*** টাংগাইল উপনির্বাচনে শামসুল হককে প্রার্থী ঘোষনা (নিবার্চনে প্রথমবারের মত মুসলীম লীগের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে তিনি জয়লাভ করেন)। একদিকে নির্বাচন অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন। দুদিকেই শেখ মুজিবের ব্যস্ততা।
***** ১৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট, বিকালে ভাইস চ্যান্সেলরের বাড়ি ঘেরাও। ১৯ তারিখ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
*** নিবার্চিত হয়ে শামসুল হক ঢাকায় আসার পর ২৩ জুন হুমায়ুন সাহেবের রোজ গার্ডেনের বাড়িতে মুসলীম লীগের পুরোন কর্মীরা মিলে সভা করেন। অনেক পুরোন নেতা এবার মাঠে নামেন। যাদের মধ্যে শেরে বাংলা, মওলানা ভাসানী, মওলানা রাগীব আহসান এমএলএ দের মধ্যে খয়রাত হোসেন, আনোয়ারা খাতুন, আলী আহমদ খান, হাবিবুর রহমান যোগ দেন। শেখ মুজিব জেল থেকে খবর পাঠান "মুসলীম লীগের পিছনে ঘুরে লাভ নাই, তারা দলে নিতে চাইলেও আর যাওয়া উচিত হবেনা, ছাত্র রাজনীতি আর করবোনা, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানই করবো, কারণ বিরোধী দল না থাকলে এদেশে একনায়কত্ব চলবে।"
### কর্মী সভায় নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্টান গঠনের সিদ্ধান্ত। নাম: পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক হন।
### জেল থেকে বের হওয়ার পর গোপাল গঞ্জে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জনসভা। সরকারের বাধাঁ। ১৪৪ ধারা জারী, মসজিদ থেকে বঙ্গবন্ধু পুনরায় গ্রেফতার রাতে জামিন। আওয়ামী লীগ গঠিত হওয়ার পর ঢাকার বাইরে এটাই প্রথম জনসভা।
### (আইনের ছাত্র বঙ্গবন্ধু আর আইন পড়বেনা শুনে শুনে শেখ মুজিবের পিতা কষ্ট পান। তিনি বলেন, ঢাকায় না পড়তে চাইলে বিলেত গিয়ে পড়তে। যদি দরকার হয় জমি বিক্রি করে টাকা দিবে। বঙ্গবন্ধু বলেন, এখন বিলেত গিয়ে কি হবে, অর্থ উপার্জন আমি করতে পারবনা" । শেখ মুজিবের জেদ হয়েছিল মুসলিম লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলেন তার উল্ট হয়েছে। এর একটা পরিবর্তন দরকার। পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কিছুই নাই। সব পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শেখ মুজিবের পিতা বললেন, আমাদের জন্য কিছু করতে হবেনা। তুমি বিবাহ করেছ, তোমার মেয়ে হয়েছে তাদের জন্য তো কিছু করা দরকার। বঙ্গবন্ধু বললেন, আপনি তো আমাদের জন্য জমিজমা যথেস্ট করেছেন, যদি কিছু করতে না পারি বাড়ি চলে আসব। তবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া চলতে পারেনা। (শেখ মুজিবের স্ত্রী নিজে কষ্ট করেও শেখ মুজিবের জন্য সব সময় টাকা জমিয়ে রাখতেন। ইত্তেহাদের সাংবাদিক হিসেবে কিছু টাকা পেতেন। উনার অন্য কোন আয়ের উৎস ছিলনা। )
### ঢাকায় ফিরে ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন করেন। ছাত্রলীগ থেকে অবসর।
### আওয়ামলীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ম্যানিফেস্টো ও গঠনতন্ত্র নিয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনা। (শামসুল হক সাহেবের সাথে মাওলানা ভাসানীর তর্ক, শামসুল হক সাহেব মওলানা ভাসানীকে বলেন: এ সমস্ত আপনি বুঝবেন না। কারণ এ সমস্ত জানতে হলে অনেক শিক্ষার প্রয়োজন, তা আপনার নাই। )মাওলানা ভাসানীকে দায়িত্ব দেয়া হয়ে ওয়াকিঙ কমিটির সদস্য মনোনয়ন দেয়ার। তিনি এমন অনেককেই মনোনয়ন দেন যাদের চেনা জানা পর্যন্ত নেই।
### প্রতিষ্ঠানের কাজে আত্মনিয়োগ, জামালপুর মহকুমায় প্রথম সভা। ১৪৪ ধারা জারী। মাওলানা ভাসানী সাহেব বক্তব্য বাদ দিয়ে মোনাজাত শুরু করলেন। মোনাজাতে যা কিছু বলার বলে ফেললেন।### সভায় মাওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে শামসুল হক সাহেবকে দিয়ে সভাপতিত্ব করানোয় মাওলানা ভাসানী রাগ করলেন। তিনি রাতে ভাত খাবেন না। তাকে নাকি অপমান করা হয়েছে। ( বঙ্গবন্ধু এ ব্যাপারে লিখেছেন: এই দিন আমি বুঝতে পারলাম মাওলানা ভাসানীর উদারতার অভাব। তবুও তাকে আমি ভক্তি শ্রদ্ধা করতাম। কারন তিনি জনগণের জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন। যেকোন মহৎ কাজ করতে হেল ত্যাগ ও সাধনার প্রয়োজন। যারা ত্যাগ করতে প্রস্তুত নয় তার জীবনে কোন ভাল কাজ করতে পারে নাই।)
### ঢাকায় আরমানিটোলা ময়দানে জনসভায় বক্তব্য প্রদান।
### শামসুল হক সাহেবের সাথে মাওলানা সাহেবের মনমালিন্য শুরু হয় জামালপুরের ঘটনার পর থেকেই। মাওলানা সাহেব সুযোগ পেলেই একে তাকে শামসুল হক সাহেবের বিরুদ্ধে বলতেন। শামসুল হক সাহেবের বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসছিল। তিনি বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পার্টির সমস্ত দায়িত্ব শেখ মুজিবের কাধেঁ এসে পড়ে।
### ১১ অক্টোবর লিয়াকত আলী খান ঢাকায় আসবেন, শেখ মুজিব মওলানা ভাসানীর নামে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে একটি টেলিগ্রাম দেন। টেলিগ্রামের উত্তর দেননি লিয়াকত আলী খান। সাংবাদিকদের বলেন আওয়ামীলীগ কি তিনি জানেন না। ### ১১ অক্টোবর আরমানীটোলায় বিরাট সভা আহ্বান করা হয়। শেষ বক্তা হিসেবে বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা করেন। উনার আহ্বানে লিয়াকত আলী খানের উদ্দেশ্য মিছিল বের করা হয়। মিছিলে পুলিশ লাটিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস ছাড়ে। শেখ মুজিব আহত হয়ে নদর্মায় পড়ে থাকেন। পড়ে উনাকে বেহুশ অবস্থায় মোগলটুলি অফিসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুলিশ রাতে ঘেরাও করলে পালানোর জন্য আহত অবস্থায় তিনতলা থেকে দোতলায় লাফ দেন। কয়েকদিন এদিক সেদিক লুকিয়ে থাকেন। পরে ভাসানী সাহেব উনাকে পাকিস্তান যেতে বলেন সোহরাওয়ার্দী ও মিয় ইফতিখার উদ্দীনের সাথে দেখা করার জন্য। উদ্দেশ্য নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠন। শেখ মুজিব পাকিস্তান যান। সেখানে সোহরাওয়ার্দীর সাথে দেখা করেন। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বিবৃতি দেন। আওয়ামীলীগের কথা পত্র পত্রিকায় ছাপানো হয়।
##### পাকিস্তানে একমাস থেকে, দিল্লী হয়ে দেশে ফিরে আসেন। কলকাতায় ও গোপালগঞ্জে পুলিশের চোখ এড়িয়ে বাড়ি আসেন। (গ্রেফতারী পরোয়ান ঝুলছিল) । পরে বরিশাল নারায়নগঞ্জ হয়ে ঢাকায় আসেন। শওকত আলীর নিকট খবর পান মাওলানা সাহেব যাদের কার্যকরী কমিটির সদস্য করেছিলেন তাদের মধ্যে থেকে বার তেরজন ভয়ে পদত্যাগ করেছেন। অনেক পুরোন যারা ছিলেন তারা বিবৃতি দিয়ে পদত্যাগ করেছেন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও এডভোকেট জেনারেলের চাকরী নিয়ে আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। এসময় কয়েকজন ছাড়া আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আর তেমন কেউ রইলনা। বঙ্গবন্ধু আবদুল হামিদ চৌধুরীর বাড়িতে উঠেন। কয়েকদিন পর সেখান থেকে আবার গ্রেফতার হন। তখন ১৯৪৯ এর ডিসেম্বর। জেলে ভাসানী, শামসুল হক, শেখ মুজিব একই সেলে ছিলেন। আওয়ামী লীগের মেরুদন্ড গুড়িয়ে দিতে উঠে পড়ে লাগে সরকার।
#### ১৯৫০ সালের শেষের দিকে মাওলানা ভাসানী ও শামসুল হক মুক্তি পান। শেখ মুজিবকে গোপালগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৫১ সালের শেষ দিকে আবার ঢাকা জেলে নিয়ে আসা হয়। অসুস্থ থাকায় জেল কর্তৃপক্ষ শেখ মুজিবকে হাসপাতালে রাখেন।(শহীদ সাহেব পুর্ব বাংলায় এসে ভাসানীর সাথে মিলে বিভিন্ন জায়গায় সভা করেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্যও দাবী জানান।)
###লিয়াকত আলীর মৃত্যুর পর খাজা নাজিমউদ্দীন প্রধানমন্ত্রী হন এবং ১৯৫২ সালে তিনি পল্টনের এক জনসভায় উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষনা দেন। ছাত্রলীগ নেতারা শেখ মুজিবের সাথে গোপনে হাসপাতালে দেখা করেন। বঙ্গবন্ধু তাদের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করতে বলেন।
###১৬ ফেব্রুয়ারী থেকে শেখ মুজিব ও মুক্তির দাবীতে অনশন করার ঘোষনা দেন। ১৫ ফেব্রুয়ারী শেখ মুজিবকে ফরিদপুর জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ১৬ তারিখ থেকে অনশন শুরু করেন। খাওয়া দাওয়া সর্ম্পুন বন্ধ করে দেন। চার দিন পর জেল কর্তৃপক্ষ নাকে নল দিয়ে খাওয়াতে শুরু করে। ২৫ তারিখ ডাক্তার এসে পরীক্ষা করে মৃত্যুপথযাত্রী শেখ মুজিবকে দেখে মুখ কালো করে ফেলেন। ২৭ তারিখ শেখ মুজিবের মুক্তির আদেশ আসে। একটানা প্রায় আড়াই বছর জেলে কাটিয়ে তিনি মুক্তি লাভ করেন।
###এক মাস বাড়িতে কাটিয়ে ঢাকায় আসেন। আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সভায় শেখ মুজিবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। মাওলানা ভাসানী ও শামসুল হক তখন জেলে ছিলেন। বাংলা ভাষা দাবী ও রাজবন্দীদের মুক্তির দাবী জানিয়ে প্রেস কনফারেন্স।
### পাকিস্তানে গিয়ে খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ। জেল বন্দিদের মুক্তি দাবী।
###পাকিস্তানে প্রেস কনফারেন্স করেন, সেখানে বলেন ত্রিশটা আসনে উপনির্বাচনে বন্ধ রয়েছে। যেকোন একটায় নির্বাচন দিতে বলূন। আমরা মুসলীম লীগ প্রার্থীকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করতে সক্ষম।
### শহীদ সাহেবের সাথে দেখা করেন এবঙ সেখানে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের এফিলিয়েশন নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
### লাহোর থেকে ঢাকায়। ওয়ার্কিঙ কমিটির সভা আহ্বান। মাওলানা সাহেব অসুস্থ অবস্থায় জেলে। শেখ মুজিব জেলায় জেলায় সভা ও সংগঠন দৃড় করার কাজে নেমে পড়লেন।
## ২৪ সেপ্টেম্বর পিকিং এ শান্তি সম্মেলনে যাত্রা। দীর্ঘ চীন সফর শেষে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন। মাওলানা সাহেব তখনও জেলে। পল্টন ময়দানে বিরাট জনসভায় বক্তব্য প্রদান।
#১৯৫৩ সালে শামসুল হক মুক্তি পেলেন। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। শেখ মুজিব তখন একাই কাজ চালিয়ে যেতে লাগলেন। জেলা উপজেলা ছাড়াও দেশের শতকরা সত্তর ভাগ ইউনিয়ন কমিটিও গঠিত হয়ে গেল। এরই মধ্যে মাওলানা ভাসানীও ছাড়া পেয়েছেন। এরপর আওয়ামীলীগের কাউন্সিল সভার আয়োজন শুরু হল।
## কাউন্সিলে মাওলানা ভাসানী সভাপতি, শেখ মুজিব সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৩ সালের মাঝামাঝিতে সাধারণ নির্বাচন ঘোষনা।
## শেরে বাংলা পুনরায় মুসলীম লীগে যোগ দেন।
### আওয়ামীলীগের একট গ্রুপ হক সাহেবের সাথে যুক্তফ্রন্ট করতে আগ্রহী হয়। ভাসানী বলেন হক সাহেব যদি আওয়ামীলীগে আসে তো আসতে পারেন। তবে তার সাথে কিছুতেই যুক্তফ্রন্ট করা চলবেনা। কারণ মুসলিম লীগ থেকে বিতাড়িতরাই তার সাথে তখন যোগ দিয়েছিল।
## ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বেশির ভাগ সদস্যই যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধে মত দেন। হক সাহেব আওয়ামীলীগে যোগ দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার সংগীরা তাকে ভুল বোঝায়।
##ময়মনসিংহে আওয়মীলীগের ওয়ার্কিঙ কমিটির সভা হয়। শেখ মুজিব সহ বেশির ভাগ সদস্যই যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। শেখ মুজিব বলেন দেশে আওয়ামীলীগ ছাড়া আর কোন দল নেই। যুক্তফ্রন্ট করা মানে কিছু মরা লোককে বাচিয়ে রাখা। শহীদ সাহেব ও ভাসানী সাহেব ও যুক্তফ্রন্টের ঘোর বিরোধী ছিলেন। যুক্ত ফ্রন্ট হবেনা এ সিদ্ধান্তের পর শহীদ সাহেব পাকিস্তান গেলেন । শেখ মুজিব জেলায় জেলায় সভা করে বেড়াচ্ছেন। আর এদিকে ঢাকায় বসে মাওলানা ভাসানী শেরেবাংলার সাথে যুক্তফ্রন্ট সই করে ফেললেন। (যেখানে আওয়ামীলীগ একক ভাবে জিততে পারত সেখানে নেজামে ইসলাম পাির্ট, কৃষক শ্রমিক পার্টি, গনতান্ত্রিক দল সহ বিভিন্ন নামের সংগঠন যুক্তফ্রন্টের নামে নমিনেশন দাবীকরতে লাগল। যারা দিনরাত খেটেছে আওয়ামীলীগের জন্য এমন লোক নমিনেশন পেলনা, মাত্র তিন চার মাস আগেও মুসলীম লীগে ছিল এরকম লোক নমিনেশন পেয়ে গেল।) সব মিলিয়ে ভজগট লেগে গেল।
### নিবার্চনে গোপালগঞ্জ থেকে শেখ মুজিব নির্বাচিত হন। তিনশ আসনের মধ্যে নয়টি পায় মুসলিম লীগ।
## আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে শহীদ সাহেব নির্বাচন পরিচালনা করলেও নির্বাচনের পর পার্লামেন্টারী বোর্ডের নেতা হন শেরে বাংলা। এর পর মন্ত্রী সভা গঠন নিয়ে আলোচনা চলল। হক সাহেব কয়েকজন নিয়ে প্রাথমিক মন্ত্রী সভা গড়তে চাইলেন। কিন্তু পুরো মন্ত্রীসভা গঠন না হলে আওয়ামীলীগের কেউ মন্ত্রীসভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। হক সাহেব বঙ্গবন্ধুকে মন্ত্রীসভায় নিতে অস্বীকৃতি জানান। মন্ত্রীসভা নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলল। পরে শেখ মুজিব সহ বার জনকে নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে রাতারাতি আরও কয়েকজন বেড়ে যায়।
### সরকার গঠনের পর শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। আদমজী জুট মিলে দাংগা সৃষিট করা হয় সরকারের বদনামের জন্য। যুক্তফ্রন্ট সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন ও অক্ষম প্রমাণের জন্য।পশ্চিম পাকিস্থানে এ নিয়ে প্রপাগান্ডা চালানো হল। আর এর পরিণতি হিসেবে মন্ত্রীসভা ভেংগে দেয়া হয়। শেখ মুজিব করাচি যান অসুস্থা শহীদ সাহেবকে দেখতে সেখান থেকে দেশে ফিরে দাংগা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হন। মাওলানা ভাসানী এসময় বিলাত যান। ১২ জন মন্ত্রীর মধ্যে একমাত্র শেখ মুজিবই গ্রেফতার হন। দশমাস জেলে থাকতে হয় আবারও।
#### এদিকে ৫৩ সালে মুসলীম লীগ বিতাড়িত কেউ কেউ মন্ত্রীত্ব ফিরে পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছিলেন। মোহাম্মদ আলী ঢাকায় এসে হক সাহেবের দলের সাথে গোপন সমঝোতা করলেন আওয়ামীলীগকে না নিলে তার দল পূর্ব বাংলায় সরকার গঠন করতে পারবে এবং শহীদ সাহেব যুক্তফ্রন্টের কেউ নয় একথা ঘোষনা দিতে হবে। শহীদ সাহেব রোগমুক্তির পর কারও সাথে পরামর্শ না করে দেশের অবস্থা না বুঝে আইনমন্ত্রীর পথ গ্রহন করলেন।
## ১৯৫৫ ৫ জুন গনপরিষদের সদস্য হন। ১৭ জুন আওয়ামীলীগের পক্ষে পূর্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্বশাসন দাবী করে ২১ দফা ঘোষনা দেন। ২১ অক্টোবর কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৬ সালে কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রী হন।
১৯৫৭ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান সামরিক শাসন জারি করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন। ১১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ১৪ মাস জেল খাটার পর তাকে মুক্তি দিয়ে পুনরায় জেলগেটে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৬০ সালের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করে তিনি মুক্তিলাভ করেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন করার জন্য তিনি গোপন রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালান। এ সময়ই স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্য স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নামে গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন।
১৯৬২ সালের ৬ ফ্রেব্রুয়ারী জননিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়। ১৮ জুন মুক্তিলাভ করেন। (২জুন সামরিক শাষনের অবসান ঘটে)। ২৪ সেপ্টেম্বর লাহোর যান এবং সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গড়ে তোলেন।
১৯৬৩ সালে অসুস্থ সোহরাওয়াদীর্র সাথে পরামশের জন্য লন্ডন যান শেখ মুজিব। ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী ইন্তেকাল করেন।
১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আওয়ামীলীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
১১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও সাম্প্রদায়িক দাংগা প্রতিরোধে দাংগা প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়।
রাস্ট্রপতি নির্বাচনের ১৪ দিন পূর্বে আবার গ্রেফতার।
১৯৬৫ সালে মুক্তিলাভ।
১৯৬৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারী ৬ দফা পেশ। ১ মার্চ বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক সফর শুরু করেন । তাকে বারবার গ্রেফতার করা হয়। ৮ মে পুনরায় গ্রেফতার হন।
১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারী রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের। ১৭ জানুয়ারী মুিক্ত দিয়ে জেল গেট থেকে পুনরায় গ্রেপ্তার।
১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী জনগণের চাপের মুখে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহর বঙ্গবন্ধুর মুক্তি। ২৩ ফেব্রুয়ারী রেসকোর্ষ ময়দানে বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা। আনুষ্টানিক ভাবে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান।
১৯৭০ সালের ৬ জানুয়ারী পুনরায় আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত। ১ এপ্রিল কার্যকরী পরিষদের সভায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত। ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানের সভায় ছয়দফার প্রশ্নে আওয়ামীলীগকে নির্বাচিত করার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান। ১৭ অক্টোবর দলের প্রতিক নৌকা নির্বাচন। ২৮ অক্টোবর জাতির উদ্দেশ্য বেতার টিভিতে ভাষন। ৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নিরংকুশ বিজয় লাভ। জাতীয় পরিষদের ১৬৯ টি আসনের মধ্য ১৬৭ টি প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮ টি আসন লাভ।
১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারী নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ। ৫ জানুয়ারী পাকিস্তানের সর্বাধিক আসন লাভকারী ভুট্টো কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের সাথে কোয়ালিশন সরকার গঠনে সম্মতি। জাতীয় পরিষদের সদস্যদের সভায় শেখ মুজিব পার্লামেন্টারী দলের নেতা নির্বাচিত হন। ২৮ জানুয়ারী ভুট্টো ঢাকায় আসেন। তিনদিন বৈঠকের পর আলোচনা ভেংগে যায়। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় জাতীয় পরিষদের সভা আহ্বান করেন। ১৫ ফেব্রূয়ারী ভুট্টো দুই প্রদেশে দুই দলের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানান।
১৬ ফেব্রুয়ারীী বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে এ দাবীর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন ক্ষমতা আওয়ামীলীগের কাছেই হস্তান্তর করতে হবে।
১ মার্চ জাতীয় পরিষদের সভা অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বনধ ঘোষনা। ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার সংগ্রামের ডাক।
৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ স্বাধীন দেশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। বাইরের কারো হুকুম এদেশে চলেনি। সবাই বঙ্গবন্ধুর নিদের্শ মেনে নিয়েছে। ১৬ মার্চ ক্ষমতা হস্তান্তর আলোচনা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু আর ইয়াহিয়ার মাঝে। ভুট্টৌ এসে আলোচনায় যোগ দেন। ২৪ মার্চ পর্যন্ত আলোচনা হয়।২৫ মার্চ আলোচনা ব্যর্থ হলে ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগ। রাতে নিরীহ জনগণের উপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নৃশংষ হত্যাযজ্ঞ। ২৫ রাত ‌১২টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। এই ঘোষনা সর্বত্র টেলিফোন, টেলিগ্রাম ওয়ারল্যাসে পাঠানো হয়। রাত ১.৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ২৬ মার্চ ইয়াহিয়া এক ভাষনে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী আখ্যা দেন।
২৬ মার্চ চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠ করেন।
১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পন করে। তার আগে ৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারী আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুকে ঢাকার উদ্দেশ্য প্রথমে লন্ডন পাঠানো হয় সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ। লন্ডন থেকে ঢাকায় আসার পথে ভারতে যাত্রা বিরতি সেখানে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ। ১০ জানুয়ারী ঢাকায় পৌছার পর অবিস্মরনীয় সম্বর্ধনা জ্ঞাপন। ১২ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৪৯ সালে দেয়া বাহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে। ৬ ফেব্রুয়ারী ভারত সফর। ২৮ ফেব্রুয়ারী সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর। ১২ মার্চ মিত্রবাহিনীর বাংলাদেশ ত্যাগ। ১০ অক্টোবর জুলিও কুরী পুরস্কার লাভ।১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব প্রদানের ঘোষনা। ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সংবিধানে স্বাক্ষর। ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান কার্যকর।
১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদের প্রথম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩ টি আসন লাভ। ৩ সেপ্টেম্বর ঐক্যফ্রন্ট গঠন। ৬ সেপ্টেম্বর আলজিরিয়া, ১৭ অক্টোবর জাপান সফর।
১৯৭৪ সালে ১৭সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষন প্রদান।
১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন।২৪ ফেব্রুয়ারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় দল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ গঠন। জাতীয় দলে যোগদানের জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও নেতার প্রতি আহ্বান।
১৫ আগষ্ট কুচক্রী সেনাসদস্যদের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে শহীদ হন। সামরিক শাষন জারি। জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দেয়ার জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর কুখ্যাত কালো আইন ইনডেমনিটি (সামরিক অধ্যাদেশ) জারী। জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক শাষনের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল। খুনিদের বিদেশের বিভিন্ন দুতাবাসে চাকরী প্রদান।
Image may contain: 1 person, text
LikeShow more reactions
Comment